ইছামতী তীরের ২০ কিমিতে কয়েকশ অবৈধ স্থাপনা

পাউবোর নোটিশের পরও অনড় দখলদাররা

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | সোমবার , ১৬ মে, ২০২২ at ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতী নদীর তীরে পাউবোর জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে শত শত স্থাপনা। প্রায় দেড় যুগ ধরে দখল প্রক্রিয়া চলে। বর্তমানে ইছামতীর রাঙ্গুনিয়া অংশে প্রায় ২০ কিলোমিটার অংশজুড়ে রয়েছে কয়েক শতাধিক অবৈধ স্থাপনা।
জানা যায়, গত বছরের ১৪ জুন ইছামতীর রোয়াজারহাট অংশের ২৭ অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদে নোটিশ দিয়েছিল পাউবো। এমনকি তাদের ৭ দিনের আল্টিমেটামও দিয়েছিল। এ সময়ের মধ্যে তারা অবৈধ স্থাপনা নিজ উদ্যোগে অপসারণ করে না নিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। পরে এদের উচ্ছেদ করা হবে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু নোটিশ দেয়ার পর প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো অনড় এসব দখলদার। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাঙামাটি পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, যেসব ব্যক্তি পাউবোর জায়গা দখল করে আছেন জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য তাদের জানানো হয়েছে। যারা নোটিশ পেয়েও এখনো দখলে রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। অবৈধ দখলদারদের তালিকা সরকারি বিভিন্ন দফতরে জমা দিয়েছি। রোয়াজারহাটের অবৈধ স্থাপনার বিষয়ে তিনি বলেন, ওই এলাকার ইছামতী ব্রিজ কাম রেগুলেটর ও ফ্লাড বাইপাস এলাকায় বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে অথবা বসতবাড়ি তৈরির নিমিত্তে অনেকে স্থায়ী ও অস্থায়ী অবকাঠামো তৈরি করেছেন। তাদেরকে মৌখিকভাবে বলা হলেও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ থেকে বিরত থাকেনি। এবার নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাতেও দখল না ছাড়ায় এবার উচ্ছেদসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ স্থাপনা ও দখলদারদের কারণে ইছামতী নদী মরে যাচ্ছে। এমনকি এসব স্থাপনার বর্জ্যে আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে ইছামতী। এতে ভরাট হয়ে যাচ্ছে ইছামতী এবং পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে জোয়ার-ভাটা বাধাগ্রস্ত হয়ে আশেপাশের কৃষিক্ষেতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
অন্যদিকে রোয়াজারহাটে ইছামতী ব্রিজ কাম রেগুলেটর ও ফ্লাড বাইপাস এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে সেচ ও বন্যার পানি নিষ্কাশনের কাজ ব্যাহত হওয়াসহ উক্ত স্থানে নির্মিত পাউবোর অবকাঠামোসমূহ হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। এই অবকাঠামোর স্বাভাবিক পরিচালনা ব্যাহত হওয়ায় পাউবোর কর্ণফুলী সেচ প্রকল্পে (ইছামতী ইউনিট) নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এতে পাউবো তথা রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্যে সমপ্রতি নদী দখলদার এবং পাউবোর জায়গা দখলকারীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর মধ্যে ২৭ দখলদারকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিশ দেয়া হয়েছিল। এর বাইরে রোয়াজারহাট এলাকায় ইছামতী নদীয় জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন বিপণী বিতান, ভাড়া বাসা, বসতঘরসহ অবৈধ স্থাপনা। স্থানীয়রা জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই নোটিশকে পাত্তা দেয়নি এসব দখলদার। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দিনের পর দিন দখল প্রক্রিয়া বেড়ে চলেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধতিন মাসে ৫২ দুর্ঘটনা, ২৫ মৃত্যু