রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের রাবার ড্যামের পানি ছেড়ে দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিনের জমাটবদ্ধ পানি ছেড়ে দেয়ার পর ইছামতী খালে মাছ ধরতে ভিড় করেন স্থানীয় মানুষ। উন্মুক্ত খালে স্থানীয়দের একযোগে মাছ ধরার দৃশ্য সবাইকে মুগ্ধ করেছে।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, শত শত মানুষ জাল নিয়ে রাবার ড্যাম সংলগ্ন খাল এবং বিলে মাছ ধরছেন। প্রত্যেককেই কয়েক কেজি করে মাছ ধরে ঘরে ফিরতে দেখা গেছে। বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছের পাশাপাশি ২–৫ কেজি ওজনের বড় মাছও পেয়েছেন বলে জানান স্থানীয় অনেকেই।
মাছ ধরতে আসা স্থানীয় আবদুল আজিজ জানান, একঘণ্টা সময় দিয়ে তিনি ছোট–বড় তিন কেজি মাছ পেয়েছেন। প্রতি বছর এই সময়ে এসে মাছ ধরার উৎসবে মাতেন পারুয়া, লালানগর, দক্ষিণ রাজানগর, রাজানগর ইউনিয়ন ও আশেপাশের এলাকার মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে পারুয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সৈয়দনগর এলাকায় প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে রাবার ড্যাম প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়। রাবার ড্যাম নির্মিত হওয়ার পূর্বে উত্তর রাঙ্গুনিয়ার ৫ ইউনিয়নের দুই হাজার একর জমি অনাবাদি থাকত। এসব এলাকার জমিতে চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত ছিল ৫ হাজারেরও বেশি কৃষক। এখন অনাবাদি জমিতে কৃষিকাজ ও সবজি চাষাবাদে এলাকার আর্থ–সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে এই রাবার ড্যাম। এছাড়াও রাবার ড্যামের ব্রিজের কারণে পারুয়া ইউনিয়নের সাথে স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, হোছনাবাদ, লালানগর, ইসলামপুর ও রাজানগর ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে।
ইছামতি রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি জহরুল আলম ও কমিটির সদস্য স্কিম ম্যানেজার আবদুস সাত্তার জানান, গত শুক্রবার রাত ১২টার দিকে রাবার ড্যামের পানি ইছামতী খালে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর খালের পানি ৭–৮ ঘণ্টার মধ্যে কমে এলে শনিবার সকাল থেকে মাছ ধরতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুজাত কুমার চৌধুরী জানান, এবার এই ইছামতী খালে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৯৫৩ কেজি মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়েছিল। খালে রাবার ড্যামের পানি ছেড়ে দেয়ার পর জমাটবদ্ধ পানিতে বেড়ে ওঠা মাছ সাধারণ মানুষ বিপুল উৎসাহে ধরেছেন। অনেকে ৩–৫ কেজি ওজনের মাছও পেয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যে বেশ কয়েক কেজি মাছ নিয়ে ঘরে গিয়েছেন আগতরা।