জীবন অনিশ্চিত জানি তবু প্রতি মুহূর্তে নিত্য নতুন রোগ– শোক–মহামারীর এই পৃথিবীতে আমরা বেঁচে আছি এখনো আলহামদুলিল্লাহ। আমরা চাইলেই অনেক কিছু পারি, ইচ্ছেয় হোক আর অনিচ্ছেয় হোক অথচ করি না, অথবা পারি না কেন যেন! কতদিনই বা আর বাঁচবো কারো জানা নেই, ভুলে যাই বেঁচে থাকার অনুভবটাই আনন্দময় মৃত্যুময় বিষাদের চেয়ে। মৃত্যু সুনিশ্চিত জেনে ও নেক হায়াতের জন্য প্রার্থনা করি, কেননা মহান স্রষ্টা প্রার্থনা পছন্দ করেন ভীষণ। এই যে বাঁচা – বাঁচার নামই তো জীবন, ছোট্ট এই জীবনে হিংসা–বিদ্বেষ–ঘৃণা, লোভ– লালসা, অভিযোগ–অপমান, পরশ্রীকাতরতা, হেলা – উপেক্ষা, সর্বনাশা উচ্চাকাঙ্ক্ষা, যত সব কুরিপু তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে বেঁচে থাকার প্রতিটি মুহূর্ত আমরা চাইলেই ভরিয়ে তুলতে পারি প্রেমময় টুকরো হাসিতে মমতায়–ভালোবাসায়–প্রার্থনায়! মানুষ চাইলে পারে না এমন কিছু নেই। আমরা সুন্দরের আরাধনায় মুহূর্ত মিশিয়ে মায়া ছড়িয়ে সময়টা আনন্দময় করে তুলতেই পারি যাতে জীবনের শেষ প্রান্তে পেছন ফিরে তাকালে অনুরণিত হয় মন – যাপিত জীবনের শোকরগুজার করে। অথচ আমরা করি না, করতে পারি না! সদিচ্ছা বা আন্তরিকতার অভাবে কিংবা সামথ্যের অসামঞ্জস্যে অথবা ইগোর কাছে আমরা হেরে যাই। জানি না, নিজের সর্বনাশ নিজেই করছি হতাশা, কষ্ট–বেদনা– নিরানন্দকে সঙ্গী করে। পরিবর্তিত পৃথিবীতে সময় বদলাচ্ছে তার ধর্মে প্রতিনিয়ত, নিজের অস্তিত্বকে যেন সেই পরিবর্তনে ভাসিয়ে না দিই আমরা। কেন অপবাদ নিয়ে, অপমানিত হয়ে নিজের সত্তাকে অপদস্থ করবো? নিজেকেই প্রশ্ন করতে হয় কখনো কখনো বিবেকের আদালতে দাঁড় করিয়ে। শুধুমাত্র সদিচ্ছার প্রয়োজন, ভীষণ প্রয়োজন এই মুহূর্তে ইচ্ছে ডানা মেলে দেওয়ার! সুকুমার বৃত্তির চর্চায় মানবিক হই আগে নিজে, মানবিক করে গড়ে তুলি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে মানবিক বোধটুকু দিয়ে, আমাদের সমাজ আমরাই গড়ে তুলি মানবতাবোধের স্পর্শে । মায়ার ছোঁয়ায় জাগিয়ে তুলি প্রতিটি সম্পর্ক, নুয়ে পড়া প্রতিটি জীবন আনন্দিত শিহরণে ভরিয়ে দিই হোক সে লজ্জাবতী লতার মত সরল, নিজের বিবেককে মুক্ত বিহঙ্গের মত নিস্পাপ করে উড়াতে শিখি সবুজ যাতে আরো সবুজাভ হয়, নীল যেন আরো সুনীল হয়ে আমাদের পৃথিবী সুন্দরতম করে ভালোবাসার রোপিত বীজে ছায়াময় করে তোলে নশ্বর ভুবনের আমাদের এই নশ্বর প্রতিটি জীবন ।