ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) আগের পর্ষদ বিকালে স্বতন্ত্র এক পরিচালককে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছিল; তবে কয়েক ঘণ্টা না যেতেই পুনর্গঠিত সেই পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল মঙ্গলবার পরিচালনা পর্ষদ নিয়ে নাটকীয় এমন ঘটনার মধ্যে দুই শেয়ারহোল্ডারকে পরিচালক করার পাশাপাশি তিনজনকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে নতুন পর্ষদ গড়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক সাংবাদিকদের নতুন পর্ষদ গঠনের তথ্য জানিয়েছেন। এর মাধ্যমে ১৮ সদস্যের ইউসিবির পর্ষদ বিদায় নিল, যেখানে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর পরিবারের নিয়ন্ত্রণ আর থাকল না। বাবুর মৃত্যুর পর ব্যাংকে নেতৃত্ব দেন তার ছেলে ব্যবসায়ী নেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। জাবেদ মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি চেয়ারম্যান ও পরিচালক পদ ছেড়ে দিলে পর্ষদে ছিলেন তার ভাই–বোন ও স্ত্রী। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপের পর ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রথম প্রজন্মের এ ব্যাংকে আক্তারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর পরিবারের আর কেউ থাকলেন না পর্ষদে।
গতকাল পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার আদেশে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ক্ষমতাবলে ইউসিবি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হয়েছে, যে সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে। একই আদেশে বলা হয়েছে, আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষার্থে এবং ব্যাংকিং সুশাসন নিশ্চিত করা ও জনস্বার্থে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ক্ষমতাবলে ইউসিবি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নতুনভাবে গঠনের জন্য পাঁচজনকে পরিচালক ও স্বতন্ত্র পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকের নতুন পরিচালক করা হয়েছে শেয়ারহোল্ডার শরীফ জহির ও মো. তানভীর খানকে। নতুন স্বতন্ত্র পরিচালক হয়েছেন– বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইউসুফ আলী এবং চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ওবায়দুর রহমান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন পদক্ষেপের আগে এদিন বিকালে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করা হয় স্বতন্ত্র পরিচালক অপরূপ চৌধুরীকে। এর আগে গত ১৬ অগাস্টও ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন আনা হয়। সেদিন চেয়ারম্যান করা হয় রোকসানা জামান চৌধুরীকে। তিনি সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বোন। তার আগে চেয়ারম্যান ছিলেন জাবেদের স্ত্রী রুকমিলা জামান। সবশেষে রোকসানার জায়গায় স্বতন্ত্র পরিচালক অপরূপ চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আগের পর্ষদ টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপে তা আর হয়নি।