ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সংকট ঘনিয়ে আসার সংকেত

ট্রাম্প-জেলেনস্কি সংঘাত : পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিক্রিয়া

| রবিবার , ২ মার্চ, ২০২৫ at ৬:৫১ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রে হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসের বৈঠকে উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডার আগে থেকেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেলেনস্কিকে স্বৈরশাসক বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। এমনকি ইউক্রেনকে যুদ্ধ শুরু করার জন্য দায়ী করেছিলেন। ট্রাম্পজেলেনস্কির বাদানুবাদে প্রকাশ্যেই যুক্তরাষ্ট্রইউক্রেন সম্পর্কে ভাঙন পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোর সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সমস্যা ঘনিয়ে আসার সংকেত দিচ্ছে। ইউক্রেনের বাইরেও ইউরোপের দেশগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র তার অঙ্গীকার ধরে রাখবে কিনা তা নিয়েও এখন আরও অনেক সংশয় ও প্রশ্ন দেখা দেবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলসাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান ১৯৪৯ সালে ন্যাটো মিত্রদের ওপর হামলাকে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলা হিসেবে বিবেচনা করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন কিনা। ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বাদানুবাদে ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয়টি প্রাধান্য পায়নি। আর ইউরোপীয়রাও নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবি মেনে ছাড় দিতে রাজি না হওয়াতেই মূলত ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।

এখন সন্দেহ জাগছে যে, এই প্রকাশ্য বিরোধ আসলে পূর্বপরিকল্পিত কোনও রাজনৈতিক ছিনতাই ছিল কিনা। যার উদ্দেশ্য হতে পারে হয় জেলেনস্কিকে যুক্তরাষ্ট্র যা চায় তাই মেনে নিতে বাধ্য করা, নাহয় এমন এক সংকট সৃষ্টি করা, যার দায় শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনীয় নেতার ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায়।

পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিক্রিয়া : ট্রাম্পজেলেনস্কির শুক্রবারের এ বৈঠক বিশ্বজুড়ে নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।

জেলেনস্কি সামাজিক মাধ্যম এঙ এ লিখেছেন, ধন্যবাদ আমেরিকা, আপনাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ, এই সফরের জন্য ধন্যবাদ। ধন্যবাদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, কংগ্রেস এবং মার্কিন জনগণ। ইউক্রেনের ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি প্রয়োজন আর আমরা তা অর্জনের জন্য কাজ করছি।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তি অর্জনে কানাডা ইউক্রেন ও ইউক্রেনীয়দের পাশে থাকবে। জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস লিখেন, ইউক্রেন জার্মানি ও ইউরোপের ওপর ভরসা রাখতে পারে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, স্টারমার ইউক্রেনের প্রতি তার অবিচল সমর্থন অব্যাহত রেখেছেন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লায়েন ফন ডার লায়েন বলেছেন, শক্ত থাকুন, সাহসী থাকুন, নির্ভীক থাকুন। প্রিয় প্রেসিডেন্ট, আপনি কখনো একা নন। ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির জন্য আমরা আপনার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব। এছাড়া ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ, ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে মলদোভার প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্দু, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান, নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইউনাস গার স্তুর, চেক প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট পেত্র পাভেল, নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডিক শোফ, এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্গাস সাকনা, পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দনাল্‌দ তুস্ক ইউক্রেনের পাশে থাকার কথা জানিয়েছে।

রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, ইউক্রেনের নেতা কঠোর তিরস্কারের শিকার হয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিরিয়াকে দুর্বল করতে ইসরায়েলের নতুন কৌশল
পরবর্তী নিবন্ধনুরুল ইসলাম