ইউরোপের সাথে জাহাজ চলাচল ‘বড় সুসংবাদ’

১৫ মে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজ যাবে নেদারল্যান্ডস ও ইংল্যান্ডে

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২২ at ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ

ইতালি, চীন, হংকং, এবং কোরিয়ার পর আগামী দিনকয়েকের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নেদারল্যান্ডস এবং ইংল্যান্ডের সাথে কন্টেনার জাহাজ চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে। ইউরোপে সরাসরি জাহাজ চলাচল দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য ‘বড় সুসংবাদ’ বলে শিপিং বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন।

সূত্র বলেছে, বিশ্বের শিপিং সেক্টরে চট্টগ্রাম বন্দরের ইমেজ বেড়েছে। অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় চট্টগ্রাম বন্দরে এখন কন্টেনার হ্যান্ডলিং পরিস্থিতি ভালো। জাহাজজট নেই বললেই চলে। অন এ্যারাইভাল বার্থিং দেয়ার রেকর্ডও সৃষ্টি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। বাংলাদেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের ৯২ভাগ সম্পন্ন হয় চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম থেকে কন্টেনার জাহাজ সিঙ্গাপুর, কলম্বো, পোর্ট কেলাং কিংবা তানজুম পেলেপস বন্দরে গিয়ে ইউরোপ আমেরিকাগামী মাদার ভ্যাসেলে ওই কন্টেনার তুলে দেয়।

চট্টগ্রাম থেকে কোনো কারণে কন্টেনার যেতে এক দুইদিন দেরি হলে মাদার ভ্যাসেল মিস হয়ে যেতো। শুধুমাত্র জাহাজীকরণে সংকটের কারণে দেশের গার্মেন্টস মালিকদের বিপুল অর্থ দিয়ে বিমানে পণ্য পাঠাতে হয়েছে। কোটি কোটি টাকা অর্ডার বাতিল হয়ে যায় জাহাজীকরণের সংকটে। চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো সমস্যা হলে রপ্তানিকারকদের ভোগান্তি এবং অনিশ্চয়তা প্রকট হয়ে উঠে। এই অবস্থার অবসান হতে চলেছে। ইউরোপের সাথে সরাসরি জাহাজ চলাচল বাড়ছে। বাড়ছে অন্যান্য দেশের সাথে সরাসরি যোগাযোগও। চীনের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেনার পরিবহন আগে থেকে ছিল। কোরিয়ার সাথেও রয়েছে চট্টগ্রামের সরাসরি জাহাজ চলাচল। গত কদিন আগে হংকংয়ের সাথে যোগাযোগ শুরু হলো। পূর্বমুখী যোগাযোগ দেশের গার্মেন্টস সেক্টরের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই যোগাযোগ যত বাড়বে গার্মেন্টস মালিকদের ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট হয়ে পণ্য আনার নির্ভরতা ততই কমতে থাকবে।

অপরদিকে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে পশ্চিমমুখী যোগাযোগ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। চীন কোরিয়া কিংবা হংকং থেকে আনা কাঁচামাল দিয়ে পোশাক তৈরি করে তা ইউরোপ আমেরিকায় পাঠানো হয়। চট্টগ্রাম থেকে ইতোমধ্যে ইউরোপের ইতালিতে জাহাজ চলাচল পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে। মাসে একটি জাহাজ আসা যাওয়া করবে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১৫ মে ইউরোপের নেদারল্যান্ডস এবং ইংল্যান্ড হয়ে একটি জাহাজ যাত্রা করবে। এমভি এএমও, এমভি বিবিসি ফিনল্যান্ড এবং এমভি স্যান আফলোনসো নামের তিনটি জাহাজ নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম এবং ইংল্যান্ডের লিভারপুল বন্দর হয়ে চট্টগ্রামে আসা যাওয়া করবে। ইউরোপে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন এই রুট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

বিশিষ্ট শিপিং বিশেষজ্ঞ আবদুল্লাহ জহির গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, নতুন এই রুট অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে এই রুট অনন্য ভূমিকা রাখবে। ইউরোপে সরাসরি জাহাজ চলাচল চট্টগ্রাম বন্দরের ইমেজকে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে উল্লেখ করে এতে দেশের শিপিং সেক্টরও সমৃদ্ধ হবে বলে মন্তব্য করেন।

বিজিএমইএর প্রথম সহ সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ইউরোপের সাথে সরাসরি জাহাজ চলাচলকে অনেক ‘বড় অর্জন’ ও ‘বড় সুসংবাদ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এর ফলে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে বিরাজিত বহু সমস্যারই সমাধান হবে। তিনি ইউরোপের সাথে জাহাজ চলাচল আরো বাড়ানোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহজে এবার ফ্লাইট ভাড়া ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা
পরবর্তী নিবন্ধঅর্থনীতিকে আরও সচল করতে সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ করছে : প্রধানমন্ত্রী