কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রিজার্ভপাড়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিবদমান দুই ডাকাত-সন্ত্রাসীদলের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির সময় খুন, ডাকাতিসহ একাধিক মামলার আসামি আমির হোসেন (৪৫) নিহতের ঘটনায় থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার সময় স্থানীয় চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর উপস্থিত থেকে আমির হোসেনকে হত্যা করিয়েছেন মর্মে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের দুইদিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে থানায় মামলাটি রুজু করেন নিহতের স্ত্রী ছকিনা ইয়াছমিন।
মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে ১০ জনকে। তন্মধ্যে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদরকে প্রধান আসামি করা হয়। বাকিরা হলেন- দুর্ধর্ষ ডাকাত সর্দার বাহিনী প্রধান ডুমখালীর আবদুর রহমান, সালাহউদ্দিন, ছরওয়ার, উলুবুনিয়া গ্রামের সিরাজ মিয়া, ডুমখালীর রেজাউল, আবু ছালাম, বাহাদুর মিয়া, ছরওয়ার আলম, বাবু মিয়া। এ ছাড়া আরো ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখানো হয়েছে।
এজাহারে বাদী ছকিনা ইয়াছমিন উল্লেখ করেন যে, ‘সর্বশেষ অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তার স্বামী আমির হোসেন বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধাচারণ করেছেন। তাই আমির হোসেনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।’ এদিকে হত্যাকাণ্ডে নিজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে মামলার প্রধান আসামি ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পরাজিতরা একজোট হয়ে আমার বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। সেই ধারাবাহিকতায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই সশস্ত্র ডাকাত-সন্ত্রাসীদলের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে নিহত আমির হোসেনের পরিবারকে ভুল বুঝিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছে পরাজিতরা।’
চেয়ারম্যান আদর জানান, মামলার এজাহারে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার যে সময় উল্লেখ করা হয়েছে সে সময় তিনি ছিলেন চকরিয়া পৌরশহরে। যার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তার কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। তাছাড়া দুই ডাকাত-সন্ত্রাসীদলের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির খবর পাওয়া মাত্রই থানার পুলিশকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান তিনি।
চেয়ারম্যান বলেন, ‘এ সময় হাতে মাইক নিয়ে এলাকাবাসীকে অভয় দেওয়া, শান্ত থাকাসহ ডাকাতদের গ্রেপ্তার অভিযানে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। এ সময় আমির হোসেনের (নিহত) স্ত্রী ছকিনা ও ছেলে আমাকে জড়িয়ে ধরে হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন। এই দৃশ্য সবাই দেখেছেন এবং অনেকেই ফেসবুকে লাইভও দেন। যা শত শত মানুষ শেয়ারও করে।’
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিবদমান দুই ডাকাত-সন্ত্রাসীদলের মধ্যে সংঘর্ষ, গোলাগুলির সময় আমির হোসেন নিহত হওয়ার ঘটনায় স্ত্রী ছকিনা ইয়াছমিন এজাহার দিলে তা মামলা হিসেবে রুজু করা হয়। আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে ঘটনায় সম্পৃক্ত নয়, এমন কাউকে আসামি করা হয়ে থাকলে তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। সেই অনুযায়ী পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’