শেখ হাসিনা সরকারের আমলে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলটি মনে করে, প্রহসনের মাধ্যমে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদের পতিত সরকারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ইউনিয়ন পরিষদ বহাল রেখে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। খবর বিডিনিউজের।
ছাত্র–জনতার আন্দোলনের গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন দিন পর শপথ গ্রহণ করা অন্তর্র্বর্তী সরকার সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। বরখাস্ত করা হয়েছে পৌর মেয়রদেরও। তবে কেবল যেসব ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানরা লাপাত্তা, সেগুলোতে প্রশাসক দেওয়া হয়েছে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে আলোচনা হয়। খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে পাহাড়ি–বাঙালি সংঘাতকে চক্রান্ত বলেও মনে করে বিএনপি।
দলটির ধারণা, অন্তর্র্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার সুদূর প্রসারী চক্রান্তের অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে এই ধরনের সংঘাতের সৃষ্টি করা হচ্ছে যা সম্পূর্ণ রূপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই ঘটনা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্তের প্রতি হুমকি স্বরূপ উল্লেখ করে বিএনপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এসব ঘটনাকে হালকা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই।
পার্বত্য জেলাগুলোতে শান্তি স্থাপনের জন্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল, পার্বত্য জেলায় সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ এবং অংশীজনদের একটি জাতীয় কনভেনশন আহ্বান করা জরুরি বলেও মনে করে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। এই লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারাদেশে মাজারে মাজারে যে হামলা ও শিল্পাঞ্চলে যে অস্থিরতা ঘটছে, তাকেও ক্ষমতায় ফেরার পথ খুঁজতে চক্রান্ত বলে মনে করে বিএনপি। দলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় মনে করে, পতিত ফ্যাসিবাদ ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য পরিকল্পিতভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও মব লিনচিং এর মত ঘটনা ঘটিয়ে শিল্পাঞ্চল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
এসব বিষয়ে সরকারের উদ্যোগে সকল গণমাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচার প্রচারণা বাড়ানো প্রয়োজন বলেও মনে করে বিএনপি।
সভায় এসব সমাজবিরোধী এবং ঐক্য বিনাশী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা এবং অবিলম্বে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরি বলে মত দেওয়া হয়।