যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে সর্বশেষ যে ফোনালাপ হয়েছে তাতে ভ্লাদিমির পুতিন সামান্য ছাড় দেওয়ার বিনিময়ে কৌশলগত বড় জয় অর্জনের পথ পরিষ্কার করলেন বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তাদের ভাষ্য, ফোনালাপের মাধ্যমে পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোড়া লাগাতে এবং বড় খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বমঞ্চে রাশিয়ার প্রত্যাবর্তনের পথ যেমন খুলেছেন, তেমনি ইউরোপ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে গজাল চালিয়ে দেওয়ার পথেও অনেকটাই অগ্রসর হতে পেরেছেন। খবর বিডিনিউজের।
এসবের বদলে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগ যেন ব্যর্থ বলে প্রতিভাত না হয়, সেজন্য তাকেও সামান্য কিছু নগদ দিয়েছেন। মঙ্গলবার দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে ওই দীর্ঘ ফোনালাপের আগে যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, তারা রাশিয়াকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে চায়, যে প্রস্তাবে আগেই ইউক্রেইন সম্মত হয়েছিল এবং যাকে পূর্ণাঙ্গ শান্তি চুক্তির দিকে প্রথম পদক্ষেপ মনে করা হচ্ছিল। অথচ শেষমেষ পুতিন যে বিরতিতে রাজি হলেন, তাকে আগের প্রস্তাবের ছিটেফোঁটা বলা যেতে পারে। দুই পক্ষ এক মাসের জন্য একে অপরের জ্বালানি স্থাপনায় হামলা করা থেকে বিরত থাকবে মস্কোর ছাড় এটুকুই, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ট্রাম্প যে খালি হাতে ফিরছেন, এমনটা যেন ধরা না পড়ে তা নিশ্চিতে পুতিন সামান্য ছাড়ের এই সতর্ক চাল চেলেছেন বলে অনেকে মনে করছেন। তবে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যে এবারই প্রথম মস্কো–কিয়েভ দুই পক্ষ তাদের বৈরিতা অন্তত স্বল্প সময়ের জন্য হলেও কিছুটা কমাতে রাজি হয়েছে, এটাকে স্বস্তিদায়ক মানছেন সবাই। হোয়াইট হাউজ বলছে, কেবল জ্বালানি অবকাঠামোই নয়, দুই দেশের মধ্যে কৃষ্ণসাগরে যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির আলোচনাও শিগগিরই শুরু হচ্ছে। ওয়াশিংটন এগুলোকে অর্জন হিসেবে দেখাতে চাইলেও ইউরোপের অনেক বিশ্লেষক তা মনে করছেন না। তারা বলছেন, জ্বালানি অবকাঠামো ও সমুদ্রপথে হামলা বন্ধ হলে তা ইউক্রেনের জন্য ভালো হবে না, কেননা যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত তারা রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতির অন্যতম প্রাণকেন্দ্র তেল স্থাপনাগুলোতে এবং তুলনায় অনেক বড় রুশ নৌবাহিনীর ওপর যেসব হামলা চালিয়েছে তা মস্কোর অগ্রগতিতে ভালোই বাধ সেধেছে। কিন্তু এখন জ্বালানি অবকাঠামো আর সমুদ্রপথে হামলায় বিরতি এলে রাশিয়া তার পুরো মনোযোগ স্থল অভিযানে দিতে পারবে।