‘অবৈধভাবে’ ইউক্রেনে প্রবেশ করে বন্দি পাঁচ বাংলাদেশি সেখানে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। এক ভিডিওবার্তায় তাদের এই আকুতি প্রকাশের পর গতকাল রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আটকদের বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। বিস্তারিত জানা গেলে ফেরানোর প্রচেষ্টা চালানো হবে।
ডয়চে ভেলে বাংলার ফেইসবুক পাতায় প্রকাশ করা ওই ভিডিওতে রিয়াদুল মালিক নামে একজন বলেন, বেলারুশ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে আছি। যে কোনো সময়ে যে কোনো কিছু হতে পারে। আমাদের আকুল আবেদন আমাদের এখান থেকে উদ্ধার করেন। খবর বিডিনিউজের।
ওই ক্যাম্পে শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু আটক আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের একটাই অপরাধ ছিল আমরা ইললিগ্যালি বর্ডার ক্রস করছিলাম। আমার এখানে অলরেডি ১৫ মাস হয়ে গেছে। অন্য ক্যাম্প থেকে মানুষ ছাইড়া দিছে। কারণ ওরা জানে ক্যাম্পে মানুষ রিস্কে।
ঝুঁকির ব্যাখ্যা দিয়ে সিলেট আঞ্চলিক টানে রিয়াদুল বলেন, রাশিয়া বোমা ফেলতেছে আর্মি বেইস দেখে দেখে। আমরা অনেক ভয়ের মাঝে আছি, অনেক আতংকের মাঝে আছি। আমাদের আটকায় রাখছে এই জায়গায়। একশ’র উপরে মানুষ আছে। রাত হলে বোমার শব্দ শুনতে পাই। গুলি শব্দ শুনতে পাই। লাইট বন্ধ করে রাখে। যেখানে তিন-চারজন মানুষ থাকতে পারে সেখানে ১০ জন মানুষ এনে ঢুকাইছে।
মোবাইল ও অন্যান্য ডিভাইস নিয়ে গেলেও তারা একটি ফোন লুকিয়ে রাখতে পেরেছিলেন বলে জানান রিয়াদুল মালিক। তবে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ তাদের নেই বলে জানান তিনি।
তাদের বিষয়ে বাংলাদেশ মিশন আরও তথ্য সংগ্রহ করছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যতদূর জানা যায়, এরা রাশিয়ায় খেলা (২০১৮-এর ফুটবল বিশ্বকাপ) দেখতে গিয়েছিল। খেলার জন্য গিয়ে ইউক্রেনে যাওয়ার উদ্দেশ্য হলো, এরা অন্য কোনো দেশে যাবে। সেখানে যাওয়ার পরে তারা ইলিগ্যাল থাকায় তাদেরকে ইউক্রেন সরকার অ্যারেস্ট করে, অ্যারেস্ট করে তারা ডিটেনশন সেন্টারে রেখে দিয়েছে। ওই ডিটেনশন সেন্টারে তারা এখনো আছে। এ পর্যন্ত আমরা এটুকু জেনেছি।
তিনি বলেন, আমরা আরও (তথ্য) পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি। তাদের সাথে আমাদের সরাসরি যোগাযোগ হয়নি। কিন্তু আমাদের মিশন ওখানে কাজ করতেছে এবং ওখানে আমাদের সহযোগী যারা আছেন, তারাও আরও তথ্য পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। আমরা তথ্য সঠিক হলে পরে তাদেরও দেশে ফেরত আনার প্রচেষ্টা চালাব।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ইউক্রেনে এক হাজার বাংলাদেশি ছিল বলে তাদের ধারণা। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই চলে এসেছে। সেখানে আমাদের জানামতে শ’খানেকের মতো আছে।
