ইউএনও-টিএইচওর অপসারণে মেয়রের আল্টিমেটাম

পটিয়ায় গণটিকায় গাফিলতির অভিযোগ

পটিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

গণটিকা কার্যক্রমে গাফিলতির অভিযোগ তুলে আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) সব্যসাচী নাথের অপসারণে আল্টিমেটাম দিয়েছেন পটিয়া পৌরসভার মেয়র আইয়ুব বাবুল। এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের অপসারণ করা না হলে পৌরবাসীকে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় পটিয়া পৌর সদরের ১ নং ওয়ার্ডের আল্লাই ওখারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গণটিকা কার্যক্রম পরিদর্শন করতে গিয়ে মেয়র এ হুঁশিয়ারি দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার কাউন্সিলর শফিউল আলম, মহিলা কাউন্সিলর ইয়াসমিন আকতার চৌধুরী ও বুলবুল আকতারসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
ইউএনও ও টিএইচওকে দোষারূপ করে পৌর মেয়র বলেন, গণটিকা কার্যক্রম পটিয়া পৌর সদরের ৯টি ওয়ার্ডের ৯টি কেন্দ্রে দেওয়ার কথা থাকলেও ইউএনও ও টিএইচও শুধুমাত্র একটি কেন্দ্রে কার্যক্রম চালানোর ব্যবস্থা করেন। এ ব্যাপারে তাদেরকে একাধিকবার জানানো হলেও তারা পাত্তা দেননি। তারা গণমানুষের গণটিকা কার্যক্রমে গাফিলতি করেছেন। পরে তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগ ও চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে গণটিকা কার্যক্রম শুরু করেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিগত সময়েও পটিয়ার ইউএনও গণমানুষকে সরকারের প্রদত্ত সেবা থেকে বঞ্চিত করে এসেছেন।
এ বিষয়ে পটিয়ার ইউএনও ফয়সাল আহমেদ বলেন, এখানে কোনো ধরনের গাফিলতি করার সুযোগ নেই। গত বুধবার পর্যন্ত পটিয়ায় ৭৫ শতাংশ মানুষ টিকা গ্রহণ করেছেন। এ পর্যন্ত ৬-৭ লাখ ডোজ টিকা পটিয়ার মানুষকে দেওয়া হয়েছে। একদিনের বিশেষ গণটিকা কার্যক্রমের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে যেভাবে নির্দেশনা এসেছে সেভাবে কার্যক্রম চালানো হয়েছে। মেয়র সাহেব এর আগেও উনার ছেলে টিকা না পাওয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। কী কারণে বারবার তিনি এসব করছেন বুঝতে পারছি না।
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএসও) সব্যসাচী নাথ বলেন, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি পটিয়া পৌর এলাকায় বিশেষ গণটিকা কার্যক্রমের জন্য কেন্দ্র চেয়ে পৌর মেয়র বরাবর একটি পত্র জারি করা হয়। ওই পত্রের বিপরীতে ওইদিন তিনি গণটিকা কার্যক্রমের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ১টি করে মোট ৯টি কেন্দ্র প্রয়োজন বলে লিখিতভাবে জানান। এরই প্রেক্ষিতে তিনি যেভাবে চেয়েছেন সেভাবে পৌর এলাকায় ৯টিসহ মোট ১৩টি কেন্দ্রে বিশেষ গণটিকা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এখানে গাফিলতি হওয়ার কিছু নেই। তিনি জানান, শনিবার পটিয়ায় ৭৪ হাজার ৫শ জনকে গণটিকার আওতায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজ গ্রহণ করেন ৬৯ হাজার ৫শ ৩০ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেন ৪ হাজার জন ও বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেন ৫২০ জন।
পত্র জারির বিষয়ে মেয়র আইয়ুব বাবুল বলেন, পটিয়া পৌরসভার দেড় লাখ বাসিন্দার জন্য শুধুমাত্র একটি কেন্দ্র দিয়ে গণটিকা কর্যক্রমের দায় সারতে চেয়েছেন টিএইচও সব্যসাচী নাথ। আমাকে যে পত্র দেওয়া হয়েছে সেখানে শুধুমাত্র ১টি কেন্দ্রের উল্লেখ রয়েছে। এ পত্রটি পাওয়ার পর একাধিকবার ৯টি ওয়ার্ডে ৯টি কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রমের তাগাদা দিলেও পাত্তা দেননি। পরে আমি নিজেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করে ৯টি কেন্দ্রে টিকা গ্রহণের ব্যবস্থা করেছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাপ্তাই লেকে পানি স্বল্পতা, কমছে বিদ্যুৎ উৎপাদন
পরবর্তী নিবন্ধস্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা গ্রেপ্তার, ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা