ইইউ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ঘোড়ার ডিম পেয়েছে বিএনপি : কাদের

| বুধবার , ১৯ জুলাই, ২০২৩ at ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সফরে বিএনপির অর্জন কতটুকু তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আপনাদের কী দিয়ে গেছে? তত্ত্বাবধায়ক দিয়ে গেছে? শেখ হাসিনার পদত্যাগ দিয়ে গেছে? তাদের কাছে দাবি করেছেন, কী দিয়ে গেছে? কী পেয়েছেন? হাঁসের ডিম আর ঘোড়ার ডিম পেয়েছেন।

তারপরে আমেরিকার প্রতিনিধি দল এসেছে। কী দিবে? শেখ হাসিনার পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার? দিয়ে গেছে ঘোড়ার ডিম। সংসদ বিলুপ্ত হবে না, শেখ হাসিনার পদত্যাগের প্রশ্নই উঠে না। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পৌনে চারটায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফির সভাপতিত্বে এই সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশমঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও দুর্যোগ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

মঙ্গলবার ও বুধবার বিএনপি যে পদযাত্রা কর্মসূচি দিয়েছে তার সমালোচনায় ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল কী বলেছেন? পদযাত্রা জয়যাত্রা, বিজয়যাত্রা। তাদের এই পদযাত্রা পরাজয়ের যাত্রা, পদযাত্রায় পতনযাত্রা শুরু হয়েছে। যতই লাফালাফি করেন কোনো লাভ হবে না। আমরা আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বলেছি, আমরা নির্বাচনের আগে ও পরে শান্তি চাই। তত্ত্বাবধায়ক আমরা চাই না, চায় বিএনপি।

তিনি বলেন, বিএনপি মনে করছে ২০০১ আর ২০০৬ সালের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাদের ক্ষমতায় দিয়ে যাবে। তাদের আশা গুঁড়েবালি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমরা বিলুপ্ত করিনি, উচ্চ আদালত বাতিল করেছে। তারা আদালত মানে না, তারা আইন মানে না। নিজেদের মতো হলে সব মানে। বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমরা মানি না। আমাদের কথা একটাই, বাংলাদেশের সংবিধানে যা লেখা আছে, আমরা সেটাই করব। নির্বাচন কমিশন সংবিধান অনুসরণ করবে, বাস্তবায়ন করবে। এর বাইরে যত কিছুই করুক, এক চুলও নড়ব না।

বিএনপি সকল শয়তানের দলের আসল ঠিকানা মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যতই মারামারির চেষ্টা করেন কোনো লাভ হবে না। এই দেশে আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে। আমরা কারও কাছে মাথানত করব না। বাংলাদেশে সব শয়তানের দলের আসল ঠিকানা বিএনপি। খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, খেলা হবে চুরিচামারির বিরুদ্ধে, খেলা হবে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, লুটপাটের বিরুদ্ধে খেলা হবে।

বিএনপিকে বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের কথার কোনো ঠিক নাই, একবার বলে এক দফা আবার বলে ৩২ দফা। মেরামত আপনাদের করতে হবে না। বিদ্যুতের নামে খাম্বা দিয়েছেন, মেরামত করেছেন খাম্বা। আপনাদের দেখানোর মত কী আছে? দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, প্রধানমন্ত্রী চেষ্টা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর উপর ভরসা রাখুন দ্রব্যমূল্য কমে যাবে। বিএনপির উপর ভরসা করলে লাভ হবে না। তাদের কাছে ঘোড়ার ডিম ছাড়া আর কিছুই পাবেন না।

নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা বিজয়ী হব, পরিবেশ শান্তিতে রাখতে হবে। প্রোগ্রাম করবেন, আশপাশ দিয়ে কে গেল দেখার দরকার নেই, তারা গায়ে পড়ে ঝগড়া করবে, সতর্ক থাকতে হবে। কাউকে কিছু বলবেন না। কেউ কিছু করলে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী দেখবে। আমাদের উপর আক্রমণ করলে পরিস্থিতি বলে দেবে কি করব। নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত নিবেন না। দেশের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, এই অনুরোধ করছি।

এর আগে দুপুর দুইটার পর থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে মূল দল ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে। দুপুর দুইটার দিকে কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সমীর চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতির নেতৃত্বে একটি মিছিল আসে সমাবেশ স্থলে। মিছিল নিয়ে আসেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি ও সাধারণ সম্পাদক সজল কুণ্ডু। যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন নিখিলও মিছিল নিয়ে আসেন মৎস্যভবন এলাকায়। শোভাযাত্রা সফল করতে নেতাকর্মীরা বাদ্যবাজনা ও ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে জড়ো হন রমনা এলাকায়।

সমাবেশের পর শুরু হয় ‘উন্নয়ন শোভাযাত্রা’, যা শাহবাগ, কাঁটাবন, সায়েন্সল্যাব, কলাবাগান হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে শেষ হবে। বুধবারও একই কর্মসূচি রেখেছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। এদিন শান্তি সমাবেশ হবে তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা মোড়ে। তারপর সেখান থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে তিব্বত, নাবিস্কো হয়ে মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে গিয়ে শেষ হবে। এছাড়া ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ মহানগরের বাইরে দুই দিনই শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপদযাত্রায় বিএনপি, ফখরুল বললেন জয়যাত্রা
পরবর্তী নিবন্ধচিকিৎসক আছেন, রোগী নেই