ইইউর দেশগুলোতে অক্সফোর্ডের টিকা দেওয়া ফের শুরু হচ্ছে

| শনিবার , ২০ মার্চ, ২০২১ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত যেসব দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা দেওয়া স্থগিত করা হয়েছিল, সেগুলোর বেশিরভাগ দেশে আবার ওই টিকা দেওয়া শুরু করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইইউর ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাকে নিরাপদ ও কার্যকর আখ্যা দেওয়ার পর জোটের ওইসব দেশ এই টিকা দেওয়া শুরু করবে।
শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার সাথে এই টিকার সম্পর্ক থাকার আশঙ্কা থেকে ইইউর ১৩টি দেশ এই টিকা দেওয়া স্থগিত করেছিল। এরপর ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি (ইএমএ) বিষয়টি পর্যালোচনা করে। পর্যালোচনায় বলা হয়, রক্ত জমাট বাঁধার উচ্চ ঝুঁকির সঙ্গে এই টিকার সম্পর্ক নেই। জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স ও স্পেন বলছে, তারা এই টিকা দেওয়া আবার শুরু করবে। তবে কবে থেকে এই টিকা দেওয়া শুরু হবে তা দেশগুলোর নিজস্ব সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। সুইডেন বলেছে, সিদ্ধান্ত নিতে তাদের আরও কিছুটা সময় দরকার। খবর বিবিসি বাংলার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত বৃহস্পতিবার দেশগুলোকে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানায়। এই টিকার বিষয়ে তাদের পর্যবেক্ষণ শুক্রবার প্রকাশ করার কথা।
ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি অল্প কিছু ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করেছে। যেসব ঘটনায় শরীরে অস্বাভাবিক অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ ছিল, তারা সেইসব ঘটনার দিকে নজর দিয়েছে যেখানে মাথায় রক্ত জমাট বেঁধেছে। টিকার ব্যবহার স্থগিত করার সিদ্ধান্ত ওই অঞ্চলে টিকাদান কার্যক্রমে উদ্বেগ তৈরি করে। ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জঁ ক্যাটেক্স বৃহস্পতিবার তার দেশের জন্য নতুন পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, মহামারি দ্রুত গতি পাচ্ছে। মনে হচ্ছে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ বাড়ছে।
ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সির নির্বাহী পরিচালক এমার কুক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই টিকা নিরাপদ এবং কার্যকরী। কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের ফলে মৃত্যু ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার যে সম্ভাব্য ঝুঁকি রয়েছে, তার তুলনায় এই টিকার উপকারী দিক হলো, টিকাটি এসব ঝুঁকি থেকে রক্ষা করবে।
তিনি বলেন, ইএমএ অল্প সংখ্যক বিরল ও অস্বাভাবিক রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনার সঙ্গে এর সম্পর্ককে একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না। তাই এই কমিটি প্রস্তাব করেছে, টিকার সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা, টিকা তৈরিতে কী ব্যবহার করা হচ্ছে সেটা জানানো নিশ্চিত করা।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিরাপদ ও কার্যকরী ঘোষণা দেওয়ার পর জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পাহন বলেন, যেসব নারীর বয়স ৫৫ বছরের নিচে তাদের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকির ব্যাপারে ডাক্তারদের কাছে তথ্য থাকা উচিত, যাতে তারা রোগীকেও সেই তথ্য দিতে পারে।
এদিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলছে, টিকা নেওয়ার ফলে রক্ত জমাট বাঁধার কোনো প্রমাণ নেই। ৮ মার্চ পর্যন্ত ইইউ ও যুক্তরাজ্যে ১ কোটি ৭০ লক্ষের বেশি মানুষ এই টিকা নিয়েছে। এদের মধ্যে ৩৭ জনের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা ঘটেছে। যে বিশাল সংখ্যক জনগণকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে সেই তুলনায় এই সংখ্যাটা অনেক কম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশাল্লায় সামপ্রদায়িক হামলা, আটক ২২
পরবর্তী নিবন্ধগাইবান্ধায় বিশ্বের দীর্ঘতম আল্পনা