এবারের বিশ্বকাপে আফ্রিকা এবং এশিয়ার দেশগুলো বেশ চমক দেখিয়েছে। এশিয়ার দুই দেশ জাপান এবং দক্ষিন কোরিয়াতো শেষ ষোলতে জায়গা করে নিয়েছে। শুধু তাই নয় জাপান হারিয়েছে দুই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানী এবং স্পেনকে। ইরানও বেশ চমক দেখিয়েছে। কিন্তু তাদের নক আউট পর্বে যাওয়া হয়নি। আফ্রিকানদের মধ্যে মরক্কো এবং সেনেগাল জায়গা করে নিয়েছে শেষ ষোলতে।
আর প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে ব্রাজিলকে হারিয়ে সবচাইতে বড় চমকটি দিয়েছে ক্যামেরুন। আজ তেমনই আরেকটি পরীক্ষায় অবতীর্ন হতে যাচ্ছে আফ্রিকার দেশ সেনেগাল। দলটির সবচাইতে বড় তারকা সাদিও মানেকে ছাড়াই দারুন চমক দেখিয়েছে সেনেগাল। এবার তাদের সামনে প্রতাপশালী ইংল্যান্ড। যারা কিনা এবারের বিশ্বকাপে অপরাজিত। তাই ইংলিশদের জন্য হয়তো সহজ হবে এই টপকাতে। আবার কঠিনও হতে পারে। কারন সেনেগাল গ্রুপ পর্বে দারুন পারফর্ম করে এসেছে।
গ্রুপ পর্বে ৬-২ গোলের বিশাল ব্যবধানে ইরানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল ইংলিশরা। পরের ম্যাচে অবশ্য তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ড্র করে। তবে শেষ ম্যাচে প্রতিবেশী ওয়েলসকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে একেবারে অপরাজিত থেকে শেষ ষোলতে জায়গা করে নেয় ইংল্যান্ড। অপরদিকে সেনেগাল বিশ্বকাপটা শুরু করেছিল নেদারল্যান্ডসের কাছে ২-০ গোলে হেরে। পরের ম্যাচে ইকুয়েডরকে ২-১ গোলে এবং গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক কাতারকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নেয় সাদিও মানের দল।
এখন শেষ আটের লড়াইয়ে ইংলিশদের বিপক্ষে কতটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে আফ্রিকার দেশ সেনেগাল সেটাই দেখার অপেক্ষা। যদিও সেনেগাল এবং ইংল্যান্ড কখনো পরষ্পরের মুখোমুখি হয়নি এখনো। তাই দু’দলের কোন পরিসংখ্যান নেই। তবে ইউরোপে খেলার সুবাদে ইংল্যান্ডের শক্তি, সামর্থ্য এবং দুর্বলতা সম্পর্কে বেশ ভালই ধারণা থাকার কথা সেনেগালের ফুটবলারদের। তাদের বেশ কয়েকজন ফুটবলার খেলেন ইংলিশ লিগের বিভিন্ন দলের হয়ে। তারপরও শক্তি আর সামর্থে নিশ্চয়ই এগিযে থাকবে ইংল্যান্ড। কারণ তারা বেশ গোছানো একটি দল। যদিও বরাবরই বড় কোন ইভেন্টের শেষ দিকে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে তারা।
গত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে গিয়ে বিদায় নেয় গ্যারেথ সাউথগেটের দল। আর গত ইউরো কাপের ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয় খালি হাতে। তারপরও ফুটবল ঐতিহ্যের ধারক বাহক দেশটি ১৯৬৬ সালের পর আরেকটি বিশ্বকাপ জয়ের পেছনে ছুটবে সেটাই প্রত্যাশিত। দলটির অধিনায়ক হ্যারিকেইনের নেতৃত্বে দুর্দান্ত খেলছে তরুণরা। তাই সেনেগালকে টপকাতে হয়তো বেশি ঘাম ঝরাতে হবে না ইংলিশদের।
অপরদিকে দলের সেরা তারকা সাদিও মানেকে ছাড়াই বিশ্বকাপ খেলতে এসে যেন শোককে শক্তিতে পরিণত করেছে সেনেগাল। তারা যেন মানের জন্য প্রতিটা ম্যাচ জিততে চায়। মাঠে না থাকলেও মাঠের বাইরে সাদিও মানে যেন অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে গোটা দলের জন্য।
এবারের বিশ্বকাপ থেকে ইউরোপের জায়ান্টদের বিদায় এশিয়া এবং আফ্রিকার দলগুলোর পুনর্জাগরণ যেন নতুন বার্তা দিচ্ছে। আর সে বার্তা নিয়ে সেনেগাল এখন শেষ আটের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছে। যদিও প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডকে হারানোটা মোটেও সহজ হবে না তাদের জন্য। তারপরও মাঠের লড়াই আসল কথা। ইংলিশদের বিদায় করে সেনেগাল শেষ আটের টিকিট পেয়ে গেলে অবাক হওয়ারও কিছু থকিবে না।