‘আ. লীগ নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকারীদের ছাড় দেয়া হবে না’: রাঙ্গুনিয়ায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ৮ মে, ২০২১ at ৬:১১ অপরাহ্ণ

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, “যারা উল্টা-পাল্টা মিছিল করে হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মুহিবুল্লাহকে হত্যা করেছে তাদের প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করতে আমরা বদ্ধপরিকর। একই সাথে যারা নিরপরাধ, এই মামলায় তাদের আসামী করা হলেও তদন্ত সাপেক্ষে তাদের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হবে। পক্ষান্তরে মামলায় যাদের নাম নেই কিন্তু তদন্তে যদি দেখা যায় তারাও এই ঘটনায় ছিল তবে তাদেরও অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। আমি প্রশাসনকেও বলেছি, যারা প্রকৃত অপরাধী তারাই মামলার আসামী হবে। আওয়ামী লীগ নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকারীদের ছাড় দেয়া হবে না।”
হেফাজত নেতা মামুনুল হক কাণ্ডে বিএনপি-জামায়াতের তাৎক্ষণিক মিছিল থেকে হামলায় নিহত আওয়ামী লীগ নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আজ শনিবার (৮ মে) দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তথ্যমন্ত্রীর পারিবারিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
সাধারণ মানুষের কাছে মুহিবুল্লাহ’র হত্যার বিচার চেয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “আগে এই কোদালা সড়ক দিয়ে হাঁটা যেতো না, প্যান্ট তুলে কাদা মাড়িয়ে হাঁটতে হতো। এতগুলো নদীর ঘাট হয়নি, নদী ভাঙন রক্ষায় ব্লক হয়নি। লম্বা লম্বা কথা বলে মিছিল করবেন, আবার সেই মিছিল থেকে আমাদের কর্মীদের হত্যা করবেন তা হতে পারে না। আমি জনগণের কাছেও এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দিলাম। পুলিশের বিচার পুলিশ করবে। আমরা আপনাদেরও বিচার দিলাম।”
তথ্যমন্ত্রীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের আয়োজনে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি বদিউল আলম মাস্টার।
সাধারণ সম্পাদক মো. ইছহাক সওদাগরের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ইদ্রিছ আজগর, নজরুল ইসলাম তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক কাউছার নূর লিটন, সদস্য নাছির উদ্দিন প্রমুখ।
এসময় ইউনিয়নের ৪শ’ দরিদ্র মানুষের মাঝে ত্রাণ সহায়তা তুলে দেওয়া হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “যারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, আমাদের বিরুদ্ধে মিছিল করে সেই মিছিল থেকে হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মুহিবুল্লাহকে হত্যা করেছে, সেই জামায়াত-বিএনপি এই বিপদে কোনো মানুষের পাশে নেই। কোনো মানুষকে তারা এক মুষ্টি চাউলও দেয়নি অথচ করোনার প্রথম থেকেই আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছে। এবারও দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সমগ্র বাংলাদেশে আবারও ব্যাপকভাবে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু করেছেন। করোনার প্রথম দফায় আমার পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সরকারি সাহায্যের পাশাপাশি রাঙ্গুনিয়ার ২০ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে ইতিমধ্যেই এনএনকে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে রাঙ্গুনিয়ার ১০ হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে ৫০০ টাকা করে নগদ অর্থ গরীব ও নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। তারপর আবারও প্রত্যেক ইউনিয়নে সরকার প্রদত্ত টাকা দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। এভাবে আমরা চেষ্টা করেছি শুরু থেকেই মানুষের পাশে থাকার জন্য।”
এর আগে মন্ত্রী নিহত মুহিবুল্লাহ’র কবর জেয়ারত করেন এবং তার পরিবারের কাছে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা উপহার দেন। এসময় তিনি নিহত মুহিবুল্লাহ’র স্বজনদের সাথেও একান্তে কথা বলেন।
উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে একটি রিসোর্টে নারীসহ হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করার খবর ছড়িয়ে পড়লে রাঙ্গুনিয়ার কোদালায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন হেফাজত ইসলামসহ স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয় আওয়ামী লীগ নেতা মুহিবুল্লাহকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৪৫ মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধভারতের সঙ্গে চলাচল বন্ধ থাকবে আরও দুই সপ্তাহ