আ. লীগ নেতার সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতার অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের এক নেতা জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি সভায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য চেমন আরা তৈয়ব উত্তেজিত ছাত্রলীগ নেতাদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ ও বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা জানান, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল করিম রাজার নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে আন্দরকিল্লাস্থ দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক চলছিল। বৈঠকে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দিন আগের মিটিংগুলোতে তাদের (ছাত্রলীগকে) কেন ডাকা হয়নি তা জানতে চান। দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি এবং দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন তার কথার জবাব দেন। এই নিয়ে ছাত্রলীগের অন্যান্য কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। এসময় তারা হৈ চৈ শুরু করেন। ওই কার্যালয়ের ভেতরে তখন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি সভাও চলছিল। সেখান থেকে বের হয়ে সাবেক সংসদ সদস্য চেমন আরা তৈয়ব ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কঠোরভাবে শাসিয়ে তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন। এই পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সভা থেকে বেরিয়ে চলে যান।

চেমন আরা তৈয়ব আজাদীকে জানান, আমরা দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে ২৭ ফেব্রুয়ারি আমাদের মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রস্তুতি সভা করছিলাম। হল রুমে চিৎকারচেঁচামেচি শুনে বের হয়ে ছাত্রলীগের ছেলেদেরকে ডাক দিয়ে বলেছি– ‘এই তোরা এত বেয়াদবি করছিস কেন? তাদেরকে আমি সামলানোর চেষ্টা করি।’

এদিকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে বাকলিয়াস্থ কেবি কনভেনশন সেন্টারে বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ইলিয়াস জাফরের উপর হামলার অভিযোগে বাকলিয়া থানায় গত ২০ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। একই সাথে ইলিয়াস জাফরের স্ত্রী শাবুনী আকতার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি বরাবর বোরহান উদ্দিনের বিরুদ্ধে তার স্বামীর উপর হামলাসহ একাধিক অভিযোগ এনে লিখিত চিঠি দিয়েছেন। মামলার কপি এবং চিঠির কপি গতকাল রাতে আজাদীর কাছে পাঠানো হয়েছে। যা আজাদীর কাছে সংরক্ষিত আছে।

এই ব্যাপারে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দিন বলেন, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মোছলেম ভাইয়ের জেয়াফতের আগের রাতে কেবি কনভেশন সেন্টারে ছবি তোলা নিয়ে আমাদের ছাত্রলীগের ছেলেদের সঙ্গে বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ইলিয়াস জাফরের মধ্যে সামান্য ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। এই বিষয়টা নিয়ে ইলিয়াস জাফর পরবর্তীতে বাকলিয়া থানায় মামলা করেছেন। আমাদের ছেলেরাও পাল্টা মামলা করেছে বাকলিয়া থানায়। উভয় পক্ষকে নিয়ে মফিজ ভাই (দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান) গত পরশু মোছলেম ভাইয়ের বাসায় বসে বিষয়টি মিটমাট করে দিয়েছেন।

কেন্দ্রের কাছে লিখিত অভিযোগের ব্যাপারে বোরহান বলেন, আমার নামে কেন্দ্রের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়নি। আমি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছি। শনিবারের বৈঠকে হট্টগোলের ব্যাপারে তিনি বলেন, বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে পার্টির অফিসে বৈঠক ছিল। এর আগেও ২৩টি বৈঠক হয়েছে। ওই সব বৈঠকের বিষয় ছাত্রলীগকে জানানো হয়নি। আমি আজকের (শনিবারের) বৈঠকে আমাদের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল করিম রাজা ভাইকে জিজ্ঞেস করেছিলামআমাদেরকে আগের বৈঠকে কেন ডাকা হয়নি? আমাদের ছাত্রলীগের কি দরকার নেই? এসময় আবদুল কাদের সুজন ভাইয়ের সঙ্গে সামান্য তর্কাতর্কি হয়েছে। সেটা তেমন কিছু নয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগর যুবলীগের কমিটি কবে
পরবর্তী নিবন্ধআওয়ামী লীগ-বিএনপি একপর্যায়ের দল হয় কীভাবে, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর