আ. লীগে আলোচনায় বেশ কয়েকজনের নাম

উপজেলা নির্বাচন : সন্দ্বীপ

ওমর ফয়সাল, সন্দ্বীপ | মঙ্গলবার , ২৩ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৫:২৯ পূর্বাহ্ণ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাসের মধ্যে ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী মাস্টার শাহজাহান বিএর মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন হয়। তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান মাঈন উদ্দিন মিশন পদত্যাগ করে চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন করায় পরে ভাইস চেয়ারম্যান পদেও উপনির্বাচন হয়।

এদিকে সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা হ্যাট্রিক বিজয়ের পর আলোচনা চলছে, উপজেলায় কে হচ্ছেন তার রানিংমেট? বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি মাঈন উদ্দীন মিশন মিতার আস্থাভাজন। দশ বছর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় তার রয়েছে কর্মী ও সমর্থক গোষ্ঠী।

উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে যাকে নিয়ে এরই মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে তিনি হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মগধরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম আনোয়ার হোসেন। এছাড়া আলোচনায় রয়েছেন নিউইয়র্কের ব্রুকলিন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নুরুল ইসলাম নজরুল এবং উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেবুননেছা চৌধুরী জেসি এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফোরকান উদ্দিন আহমেদ।

মাহফুজুর রহমান মিতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দের একাংশের আলাদা বলয় আছে। যার প্রভাব দেখা গেছে সদ্য সমাপ্ত সংসদ নির্বাচনে। সেখানে তার বিরোধীরা ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। এ অংশের নেতাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক মেয়র জাফর উল্যাহ টিটু, উত্তর জেলা যুবলীগের সহসভাপতি ও মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লায়ন মিজানুর রহমান, সাবেক পৌর প্রশাসক রফিকুল ইসলাম চেয়ারম্যান, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাজিবুল আহসান সুমন প্রমুখ।

জাফর উল্যা নির্বাচনে এলে জমজমাট প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। একই কথা বলা হচ্ছে যুবনেতা ও মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লায়ন মিজানুর রহমানকে নিয়ে। তার ছোট ভাই উপজেলা যুবলীগের সেক্রেটারি হওয়ায় বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন।

সাবেক মেয়র জাফর উল্যা টিটু আজাদীকে বলেন, দলীয়ভাবে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হলে সেক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করি। আর যদি দলীয় মনোনয়ন না হয়ে উন্মুক্ত থাকে সেক্ষেত্রে নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।

উত্তর জেলা যুবলীগের সহসভাপতি ও মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লায়ন মিজানুর রহমান আজাদীকে বলেন, ২০১৪ সালেও উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে লড়ছিলাম। তার অভিযোগ, সেবার মেকানিজম করে তাকে জিততে দেয়া হয়নি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দলীয় মনোনয়ন নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন তিনি।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেবুননেছা চৌধুরী জেসি তিন মাস পূর্বে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে তার প্রার্থিতার বিষয়টি স্পষ্ট করেন গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের কাছে। তিনি জানান, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলে তিনি নৌকার মনোনয়ন চাইবেন। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন না। আর দলীয় প্রতীকে না হয়ে উন্মুক্ত থাকলে সেক্ষেত্রে তিনি অবশ্যই নির্বাচন করবেন।

উপজেলা নির্বাচনে নিজের প্রার্থিতা নিয়ে আজাদীকে মতামত প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম নজরুল। তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণা হলে আশা করি সবই জানতে পারবেন।

সন্দ্বীপ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান মাঈন উদ্দীন মিশন আজাদীকে বলেন, দলীয় মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে লড়ব। তিনি জানান, সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন নিয়ে এগিয়ে যাবেন।

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়তে পারেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ওমর ফারুক। ৬ মাস আগে উপনির্বাচনে দ্বিতীয় হওয়া যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম জিল্লু, সাবেক ছাত্রনেতা দেলোয়ার হোসেন সন্দ্বীপীও প্রার্থী হতে পারেন। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমান সুমনও প্রার্থী হতে পারেন।

এদিকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপির সাবেক সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন আজাদীকে বলেন, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রশ্নই আসে না। দলীয় সরকারের অধীনে, বিশেষ করে শেখ হাসিনার অধীনে ভালো নির্বাচন যে হতে পারে না সেটা সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে সারা দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধওভারটেক করতে গিয়ে ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে বাইক
পরবর্তী নিবন্ধপ্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু সকাল ১০টায়