চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মেয়র প্রার্থীকে নিয়ে সার্কিট হাউজে বৈঠক করেছেন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী ও দলের শীর্ষ নেতারা। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে এই বৈঠক। এ সময় বাইরে অনেক নেতাকর্মী ও সাংবাদিক অপেক্ষা করতে থাকেন।
সার্কিট হাউজে বৈঠকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি, ড. আবু রেজা মো. নেজামুদ্দীন নদভী এমপি, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি, সাইমুম সারওয়ার কমল এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এমপি, সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
কঙবাজারের সাংসদ সাইমুম সারওয়ার কমল আজাদীকে জানান, আমরা মোশাররফ ভাইয়ের (দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি) নেতৃত্বে চট্টগ্রাম এবং কঙবাজারের সকল এমপি-মন্ত্রী ও দলের শীর্ষ নেতারা আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বিষয় বসেছেন-আলোচনা করেছেন।
বৈঠকে উপস্থিত এক শীর্ষ নেতা আজাদীকে জানান, বৈঠকে নির্বাচনী কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে দলীয় মেয়র প্রার্থীকে জয়ী করতে কিভাবে জনগণকে উদ্ধুদ্ধ করা যায় এবং পেশাজীবীসহ সর্বসাধারণকে সম্পৃক্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও বৈঠকে দলের নেতাকর্মীদেরকে শুধুমাত্র দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। কোন ওয়ার্ডে গিয়ে কেউ কাউন্সিলরের পক্ষে কোন কথা না বলারও সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান ঐ নেতা।
এদিকে বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের মধ্যে ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে একযোগে অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত হয়। ৪১ ওয়ার্ডের অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মহানগর-উত্তর-দক্ষিণ ও কঙবাজারের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীরা অংশ নেবেন। এছাড়াও আউটার স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম মহানগর-উত্তর ও দক্ষিণ জেলার উদ্যোগে বড় ধরনের শো ডাউন করার সিদ্ধান্ত হয়। এতে শুধুমাত্র দলীয় শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির নেতৃত্বে দলের শীর্ষনেতারা বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আগামী ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা শুরু হবে ৮ জানুয়ারি থেকে।
এদিকে বিডিনিউজ জানায়, বৈঠক শেষে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিটি নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের দলীয় আলোচনা হয়েছে, আর কিছু নয়। দলীয় মনোনয়ন না মেনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। বাকিরা নিজস্ব প্রার্থী….।’
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম-৯ আসনের সাংসদ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, নির্বাচন আসন্ন। চট্টগ্রাম ও কঙবাজারের সাংসদরা বসেছিলেন। নগরীতে জেলা-উপজেলার বাসিন্দা অনেক ভোটার বসবাস করেন। নির্বাচনের জন্য তাদের রাজনৈতিকভাবে উদ্বুদ্ধ করার বিষয়ে নেতৃবৃন্দ আলোচনা করেছেন। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হলে নেতাদের অনেকে প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। তাই ভোটারদের সম্পৃক্ত করার বিষয়ে এখন থেকেই যাতে তারা রাজনৈতিক উদ্যোগ নিতে পারেন তা নিয়ে কথা হয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে দলের ‘কঠোর অবস্থান’ থাকবে বলে জানান নওফেল।