যারা বাংলাদেশপন্থি তাদের মধ্যে নির্বাচন হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিরোধী, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদীদের কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না।
গতকাল শনিবার চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারে ছাত্র–জনতার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে মাহফুজ আলম এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বিএনপি–জামায়াত নির্বিশেষে যত রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন আছে, শ্রমিক, নারী, আলেম–ওলামা আছেন, সবাই যারা বাংলাদেশপন্থি, সবাই বাংলাদেশে থাকবেন এবং সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তারা পজেটিভ একটি কম্পিটিশনের ভিতর দিয়ে বাংলাদেশে শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন। বাংলাদেশের জনগণকে নিয়ে বৈষম্যহীন ইনসাফমূলক একটি শাসন ব্যবস্থা কায়েম করবেন। খবর বিডিনিউজের।
ছাত্র–জনতার প্রবল আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দেড় দশকের শাসনের অবসান ঘটে। সেদিন দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের মন্ত্রী–এমপি ও দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের হত্যা, গণহত্যা মামলায় বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।
উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, আমাদের সরকারের অগ্রাধিকার রয়েছে খুনিদের বিচার করা, গুম–খুন, ধর্ষণের বিচার করা, সংস্কার করা এবং অবশ্যই বাংলাদেশপন্থি সকল রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশকে উপহার দেওয়া, যেটি গত ১৬ বছরে সম্ভব হয়নি।
উপদেষ্টার শুভেচ্ছা বিনিময়কালে সেখানে উপস্থিত ছিলেন হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল, হাজীগঞ্জ থানার ওসি মহীউদ্দীন ফারুক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চাঁদপুর নাগরিক কমিটি ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
সংস্কার কার্যক্রম শেষে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর : এদিকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, আমরা সংস্কার কার্যক্রম শেষে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করব। গতকাল সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সেনা শাসন আসার কোনো প্রেক্ষিত নেই। আমরা এবার কোনো রাষ্ট্রের মদদে হাসিনাকে উৎখাত করিনি। আমরা ছাত্র–জনতা রক্ত দিয়ে হাসিনাকে উৎখাত করেছি। আমাদের কারো তাবেদারি করার আর দরকার নেই। হাসিনার তাবেদারি করার যে প্রক্রিয়া সেটিকে নস্যাৎ করে দিয়ে নিজেদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এনেছি।
মাহফুজ আলম বলেন, আমরা কারো কাছে আর মাথা নত করব না। ওয়ান ইলেভেন নিয়ে মিছে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে বলব, আমরা যারা বাংলাদেশপন্থী ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তি আছি; তারা সরকারকে সহযোগিতা করি সংস্কারগুলো করার জন্য। সংস্কার কার্যক্রম শেষে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা ক্ষমতা হস্তান্তর করব।
তিনি বলেন, আমরা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট শাসন ব্যবস্থা উৎখাত করে সন্তুষ্ট নই। আওয়ামী লীগ ফ্যাসিজমের যত বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন প্রান্তে, প্রশাসনে, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে রয়ে গেছে, তাদেরকে আমরা বিচারের আওতায় আনব। তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে শহিদদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাব।
উপদেষ্টা বলেন, অনেকগুলো কমিশন সংস্কারের প্রস্তাবনা প্রস্তুত করেছে। খুব শিগগিরই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সংস্কার না করলেই নয়, নির্বাচনের পূর্বে সে সকল সংস্কার করতে চাই।