পরিচ্ছন্ন ও রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। পৃথক সভা দুটি থেকে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের কড়া বার্তা দিয়ে বললেন, অবহেলা করলে কোনো ছাড় নয়। একইভাবে গৃহকর নিয়ে ভবন মালিকদের কড়া বার্তা দিয়ে বললেন, আয় থাকলে অবশ্যই পৌরকর দিতে হবে।
পরিচ্ছন্ন বিভাগ : চসিক কার্যালয়ে গতকাল সকালে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, অতীতে কী হয়েছে, কী হয়নি এটা আমার কাছে বিবেচ্য নয়। এখন থেকে আপনারা শতভাগ আন্তরিক হয়ে কাজ করবেন, এটা আমার প্রত্যাশা। যারা আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করবেন, তাদের আমি সব ধরনের সহায়তা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। আর যদি কেউ দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেন, তাহলে কোনো ছাড় নেই। সভায় মেয়র বলেন, পরিচ্ছন্ন বিভাগ নিয়ে নগরবাসীর অভিযোগ বেশি থাকে। কাজেই আমার প্রত্যাশা থাকবে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করতে সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করবেন।
তিনি আরো বলেন, দায়িত্ব পালনকালে আমাকে দিয়ে কোনো ধরনের অনৈতিক কার্যক্রম কেউ করাতে পারবে না। পরিচ্ছন্ন সুপারভাইজার ও কর্মকর্তাদের দৃঢ় মনোবল, সাহস নিয়ে কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি আগামীর চট্টগ্রাম নগরীকে বাংলাদেশের মডেল শহরে পরিণত করতে চাই। কাজেই আপনারা সেভাবে কাজ করতে মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।
কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন আঞ্চলিক কার্যালয় জোন-৬ এর নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া আকতার ও মেয়রের একান্ত সচিব মো.আবুল হাশেম।
পৌরকর নিয়ে যা বললেন : এদিকে রাজ বিভাগের কর ও উপ-কর কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় রেজাউল করিম চৌধুরী নগরের বিত্তশালীদের ইঙ্গিত করে বলেন, আপনারা শহরে বাস করবেন, বহুতল ভবন বানিয়ে ভাড়া দিবেন, অথচ পৌরকর চাইতে গেলে দিবেন না! এ কেমন মানসিকতা? দেশের কোনো ব্যক্তি কিন্তু আইনের ঊর্ধ্বে নন।
তিনি আরো বলেন, সিটি কর্পোরেশন কোনো ধরনের পৌরকর বৃদ্ধি করেনি। পূর্বের রেইটে কর আদায় করছে। শুধুমাত্র করের আওতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ কোন ভবন একতলা থেকে যদি পাঁচতলা হয় সেক্ষেত্রে ফ্ল্যাট ভাড়া দিলে বর্ধিত আয়ের কারণে করের আওতা বাড়বে। সভায় ট্রেড লাইসেন্স করার বিষয়ে গ্রাহকদের অনীহার কারণগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ট্রেড লাইসেন্সের ক্ষেত্রে উৎসে কর, আয়কর, ভ্যাট আদায় নিয়ে গ্রাহকদের অভিযোগ রয়েছে বলে মেয়রকে অবহিত করা হয়। যেমন লাইসেন্স ফি ৫০০ টাকা হলে তার সাথে গ্রাহককে আয়কর দিতে হয় ৩০০ টাকা । আবার ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আসে ৭৫ টাকা। বিষয়গুলো নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেন মেয়র।
সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মুফিদুল আলম। উপস্থিত ছিলেন রাজস্ব কর্মকর্তা শাহেদা ফাতেমা চৌধুরী ও মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাসেম।
মো. মফিদুল আলম বলেন, ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬টি ওয়ার্ডের ১৪ শতাংশ ও বাকি ২৫টি ওয়ার্ডে ১৭ শতাংশ হারে পৌরকর আদায় করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের কাছ থেকে ১৬০ কোটি টাকা দাবির বিপরীতে ৩৯ কোটি টাকা ও রেল কর্তৃপক্ষের কাছে ৭৫ কোটি টাকা দাবির বিপরীতে ৩৬ কোটি টাকা পাওয়া গেছে।