আড়াই বছরেও শেষ হয়নি মামলার তদন্ত

রাউজানে তোহেল হত্যা

রাউজান প্রতিনিধি | বুধবার , ১১ নভেম্বর, ২০২০ at ৪:৫০ পূর্বাহ্ণ

২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয় রাউজানের কিশোর তোহেল। এর মধ্যে আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শেষ হয়নি। তার বাবা মো. হারুন ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনে ধর্ণা দিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তার অভিযোগ, বিচারের দাবিতে অনঢ় অবস্থান নেয়ায় খুনিরা তাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছেন। তিনি ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় কিশোর তোহেল। পরদিন সকালে পুকুর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় তার বাবা মো. হারুন বাদী হয়ে ৯ জানের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজহারে আসামি করেন স্থানীয় আবু বক্করের ছেলে মো. আলী আজাদ (৩৩), ফজল আলীর ছেলে মো. রুবেল (২৫), আবদুল বারেকের ছেলে আবুল কালাম, মজলিশ মিয়ার দুই ছেলে মো. খোকন (২৮) ও মো. কামরুল (৪০), মো. জানু, বানু বেগম, লোকমানের ছেলে মো. টিপু ও জুনু সর্দারের ছেলে মো. ইকবালকে। ৯ আসামির মধ্যে ঘটনার দিন পুলিশ আলী আজাদ ও রুবেলকে এবং আড়াই মাস পর কামরুলকে গ্রেপ্তার করলেও তারা তিনমাস পর জামিনে বেরিয়ে আসেন।
মামলার বাদী মো. হারুন বলেন, রাউজান থানায় করা মামলার (রাউজান থানার মামলা নং- ০৭ (০৪)/২০১৮ইং) অগ্রগতি না দেখে ২০১৮ সালের ১১ জুলাই আমি চট্টগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটির সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে পিবিআই বা সিআইডির মাধ্যমে তদন্তের নির্দেশদানের জন্য আমি আবেদন করি। বিজ্ঞ আদালত আমার আবেদনটি আমলে নিয়ে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিকে। তদন্তভার পেয়ে এক মাসের মাথায় সিআইডির একটি দল ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন। পরবর্তীতে এক সপ্তাহ পর আবারো সিআইডির এসপিসহ একটি দল তদন্তে আসেন। তিনি ১ নং আসামি রাজুর স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে এই ঘটনায় জড়িত বাচাকে গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় আনার জন্য কোর্টে আবেদন করার সুপারিশ করেন। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বরাবর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় ৭নং রাউজান ইউনিয়নের ০৮নং ওয়ার্ডের মৃত কবির আহমেদের ছেলে মো. জাহাঙ্গির আলম প্রকাশ বাচাকে (৩০) গ্রেপ্তারপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেন বাদী। কিন্তু এখনো তাকে গ্রেফতার করা হয়নি।
সর্বশেষ গত ২৫ অক্টোবর দুপুরে জেলার সিআইডি ইন্সপেক্টর রুজিনা আকতার ও উপপরিদর্শক মো. খালেদ ঘটনাস্থলে তদন্তে এসেছিলেন। তারা এখানে একাধিক স্বাক্ষীর সাথে কথাও বলেছেন। ওই দিন তদন্তে আসা পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) রুজিনা আকতারের কাছে এই প্রতিবেদক মামলার তদন্ত আর কতদিন চলবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি খুনের মামলা, তাই গভীরভাবে তদন্ত করা দরকার। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সময় লাগছে।
গতকাল ১১ নভেম্বর মামলার বাদী মো. হারুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত। তিনি কোয়ারেন্টাইনে থাকায় এখনো রিপোর্ট দিতে পারেননি বলে তাকে সিআইডি থেকে জানানো হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধক্ষমতা হস্তান্তরে বিলম্ব হলে আইনি ব্যবস্থা
পরবর্তী নিবন্ধভুয়া মালিক সেজে ৭২ লাখ টাকা আত্মসাৎ