নগরীর আগ্রাবাদে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুবলীগ নেতা নামধারী বড় ভাইয়ের পোস্টার ছেঁড়া নিয়ে সংঘর্ষে আহত যুবলীগ কর্মী মারুফ চৌধুরী মিন্টু চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। হাসপাতালে নেয়ার ২০ ঘণ্টা পর গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা নাগাদ ডবলমুরিং থানাধীন ধামরা পুকুর পাড় এলাকায় মারুফের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা তাকে আহতবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে চমেক হাসপাতালে পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নিহত মারুফ চৌধুরী ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ সালেহ আহমদ চেয়ারম্যান বাড়ির কামাল চৌধুরীর ছেলে। তার বড় ভাই আলমগীর চৌধুরী আলো ২৮ নম্বর পাঠানটুলি ওয়ার্ড যুবলীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে দাবি করছেন। তিনি মহিউদ্দিন বাচ্চুর অনুসারী বলে জানা গেছে। যুবলীগ কর্মী মারুফের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আরেক যুবলীগ কর্মী রমজানের বিরুদ্ধে। রমজান স্থানীয় আরেক যুবলীগ নেতা মোস্তফা কামাল টিপুর অনুসারী। টিপু নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। ডবলমুরিং থানার ওসি সদীপ কুমার দাস গতকাল রাতে আজাদীকে বলেন, এই ঘটনায় এখনো নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। তাদের অভিযোগ পেলে এটা হত্যা মামলা হিসেবে নেয়া হবে। ওসি বলেন, নিহত যুবক ও হামলাকারীর মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশসহ স্থানীয় সূত্রগুলো আজাদীকে বলেছেন, গত বুধবার রমজানসহ কয়েকজন মিলে স্থানীয় যুবলীগ নেতা আলমগীর চৌধুরী আলোর গ্রুপের ছেলেদের লাগানো শুভেচ্ছা সম্বলিত কয়েকটি পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেন। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মহিউদ্দিন বাচ্চুর ছবি দিয়ে আলো এসব পোস্টার লাগিয়েছিলেন। বড় ভাই আলোর লাগানো পোস্টার ছেঁড়ার ঘটনায় পরে ক্ষিপ্ত হয়ে মারুফসহ কয়েকজন ওইদিনই রমজানকে ধরে নিয়ে এসে মারধর করেন। পরদিন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ কমার্স কলেজের পেছনে ধামরা পুকুর পাড় এলাকায় মারুফকে একা পেয়ে যায় রমজান। এ সময় মারুফ একটি টং দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। এমন সময় পেছন থেকে ভারী কোনো বস্তু দিয়ে মারুফের মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায় রমজান। পরে স্থানীয়রা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসে। জানা গেছে, নিহত মিন্টু আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় পানি সরবরাহ করে থাকে। তার একবছরের একটি ছেলে রয়েছে। মিন্টুর বড় ভাই আলমগীর চৌধুরী আলো তার ভাইকে হত্যার জন্য মোস্তফা কামাল টিপুর অনুসারীদের দায়ী করছেন। এ হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মূলত বিভিন্ন সময় বিবদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে আসছে। ফুটপাতের দোকানপাট থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে।