আসুন মানবিক হই

সুমন চ্যাটার্জী | বুধবার , ২৬ জুন, ২০২৪ at ১০:২৯ পূর্বাহ্ণ

মৃত্যুর দিকে যাত্রা আমাদের কিংবা ছুটে চলা অমোঘ এই পরিণতিকে বরণ করার দিকে। প্রতিটা জন্মদিন জানান দেয় একটি বছর হারিয়ে গেল জীবন থেকে। আনন্দ উদযাপনের কারণ হয়তো আরেকটি বছর বেঁচে থাকার আনন্দের।

প্রতি মুহূর্তে পৃথিবীতে নব প্রাণের উদয়ের সাথে সাথে অস্তমিত হচ্ছে কতশত প্রাণ। তার সবটা বুঝেও আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা আর প্রত্যাশার পিছনে ছুটতে ছুটতে পৌঁছে যাই জীবন সায়াহ্নে! কী অদ্ভুত আমরা! জানি মৃত্যুই সত্য। অথচ এমনভাবে বাঁচি যেন কখনোই মরবো না! আর এমনভাবে মৃত্যু হয় যেন কখনোই জন্ম হয়নি। খুব কাছের জন নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত হয়তো মনে রাখে কিংবা রাখতে হয়; বাকিদের কাছে মৃত্যুর পর অস্তিত্ব থাকে না!

আপনি আপনার বাবার বাবা কিংবা তার বাবার নাম পর্যন্ত হয়তো বলতে পারবেন কিন্তু এর আগের জেনারেশনের নাম বলতে পারবেন? সম্ভবত না! বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা থার্ড জেনারেশন পর্যন্ত নাম মনে রাখতে পারলেও তার আগের জেনারেশনের নাম আপনি রক্তের সম্পর্ক হয়েও পারবেন না। সনাতন ধর্মে অবশ্য তর্পনের জন্য পূর্ববর্তী বাবার ও মায়ের দিকে সাত প্রজন্মের নাম লিপিবদ্ধ রাখা হয়! কিন্তু তার আগের জেনারেশনের নাম কে মনে রাখে?

অথচ রবিঠাকুর কিংবা আইনস্টাইনের কথা ভাবুন; তাঁদের ছেলে মেয়ে কিংবা দাদুর নাম না জানলেও উনাদের সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষ জগতে দুর্লভ! সবাইকে মহাকাল মনে রাখে না কিন্তু কাউকে কাউকে মনে রাখে; রাখতে হয়। কারণ তাঁরা মৃত্যুর সত্যকে উপলব্ধি করে নিজেদের তৈরী করেছিলেন। তাঁরা জানতেন জগতের হিতে যদি নিয়োজিত থাকা যায়, মানব কল্যাণে নিজেকে যদি বিলীন করা যায় তবেই মানব জন্মের সার্থকতা ; তবেই শান্তি। আসুন মৃত্যুর সত্যকে উপলব্ধি করে বাঁচার মতন বাঁচি, নিজের অস্তিত্বের জানান দিয়ে বাঁচি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅটোরিকশাতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ
পরবর্তী নিবন্ধআত্মার কন্দন