আসুন, অভিভাবকরা আগে সচেতন হই

সুমি ভট্টাচার্য | মঙ্গলবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৮:০৭ পূর্বাহ্ণ

আমরা অভিভাবক! সন্তানের ভরণপোষণ ও শিক্ষার খরচ চালিয়ে গেলেই দায়িত্ব শেষ, এই ধরনের চিন্তা থেকে বেরিয়ে এসে সন্তানকে সুন্দর পারিবারিক পরিবেশ ও সঠিকভাবে নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষায় মানুষ হয়ে উঠতে সহযোগিতা করাই আপনার মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
জানুন, মনোবিজ্ঞানীরা সবসময় বলে থাকেন – যে শিশু উপহাস নিয়ে বাঁচে, সে ভিরু হয়ে বড় হয়। যে শিশু সমালোচনার মধ্যে বড় হয়, সে শুধু নিন্দা করতে শেখে। যে শিশু সন্দেহের মধ্যে বড় হয়, সে প্রতারণা করতে শেখে। যে শিশু বিরোধিতার মধ্যে বড় হয়, সে শত্রুতা করতে শেখে। যে শিশু স্নেহের মধ্যে বড় হয়, সে ভালবাসতে শেখে। যে শিশু উৎসাহ পেয়ে বড় হয়, সে আত্মবিশ্বাসী হয়। যে শিশু সত্যের মধ্যে বড় হয়, সে সুবিচার করতে শেখে। যে শিশু প্রশংসার মধ্যে বড় হয়, সে অন্যদের গুণ ধারণ করতে শেখে। যে শিশু ভাগ করে খাওয়ায় অভ্যস্ত হয়, সে সুবিবেচক হয়। যে শিশু ধৈর্যের মধ্যে বড় হয়, সে সহনশীল হয়। যে শিশু সুখী পরিবেশে বড় হয়, সে ভালোবাসা ও সৌন্দর্য শেখে।
ভুলে যাবেন না, কোমলমতী শিশু নরম মাটির মতো। ছোট থেকে যা দেখবে ও শিখবে বড় হয়েও গড়ে উঠবে মানসিকতা তেমনভাবেই। পরবর্তীতে আপনার সন্তান বড় হয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে যত শিক্ষিত ও বড় পদধারী হোক না কেন, মানসিকতায় উন্নত ও মনুষ্যত্বের দাবিদার হতে পারেনা। এতে আপনি অভিভাবক হিসেবে জীবনের কাছে হেরে যাবেন। বুঝুন, বয়সকাল মাথা নত করে চলতে হবে সমাজের কাছে। টাকায় সব নয়, সন্তান বড় হবে ঠিকই কিন্তু মানুষ হবেনা। তাই আসুন, অভিভাবক আগে সচেতন হই। ঝগড়া-বিবাদ, অন্যায়, সমালোচনা, লোভ, হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার, দুর্নীতি ও স্বার্থপরতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখি। লেখক: শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মী

পূর্ববর্তী নিবন্ধধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার অভাবই আত্মহত্যার অন্যতম কারণ
পরবর্তী নিবন্ধশ্রদ্ধা নিবেদন- প্রভাত ফেরি না মধ্যরাত