আসার কথা জলপাই, এসেছে গুঁড়োদুধ

গ্রেপ্তার আরও ২

আজাদী অনলাইন | মঙ্গলবার , ১৭ নভেম্বর, ২০২০ at ৯:৪৯ অপরাহ্ণ

আমদানি করার কথা জলপাই কিন্তু এসেছে শিশুখাদ্য গুঁড়োদুধ। তাও আবার জলপাইয়ের কথা বলে আমদানি করা শিশুখাদ্য গুঁড়োদুধ খালাসের ছাড়পত্রের জন্য তৈরি করা হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভূয়া ওয়েবসাইট। এ ঘটনায় চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও দু’জনকে।
তারা হলো আতিকুর রহমান রাসেল (৩৭) ও রাহাত হায়দার চৌধুর রানা (৩২)।
সোমবার রাতে রাসেলকে আগ্রাবাদ এবং রানাকে বড়পোল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ। বিডিনিউজ
তিনি বলেন, “এই ঘটনায় বন্দর থানার মামলায় আদালতে নেওয়ার পর আজ মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।”
এ ঘটনায ২৯ অক্টোবর নগরীর বন্দর থানায় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সহকারী শুল্ক কর্মকর্তা সুজয় দেবনাথ বাদি হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২২ (২) ও ২৩ (২) এবং দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় মামলা করেন।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার সিয়াম এন্টারপ্রাইজের মালিক এবং সিএন্ডএফ প্রতিনিধি চট্টগ্রামের খান এন্টারপ্রাইজের মালিককে মামলায় আসামি করা হয়।
এজাহারে বলা হয়, ঢাকার চকবাজারের সিয়াম এন্টারপ্রাইজ এ বছরের শুরুর দিকে ১৩ হাজার ৫২০ কেজি চীনাবাদাম ও ৪ হাজার ৫১০ কেজি জলপাই আমদানির ঘোষণায় একটি চালান আনে চট্টগ্রাম বন্দরে।
তাদের মনোনীত সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান খান এন্টারপ্রাইজ চালানটি খালাসের জন্য গত ২৩ এপ্রিল কাস্টমসে বিল অভ এন্ট্রি দাখিল করে।
সন্দেহজনক পণ্যের উপস্থিতির তথ্য থাকায় কাস্টমসের এআরআই শাখা চালানটির খালাস স্থগিত করে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করে।
এতে দেখা যায়, ঐ চালানে আনা হয়েছে উচ্চ শুল্কের ২১ হাজার ৬০ কেজি শিশুখাদ্য গুঁড়োদুধ।
ঘোষণাবহির্ভূত পণ্য আনায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানিকারককে শুল্ক বাবদ ৬৫ লাখ টাকা, শতভাগ জরিমানা বাবদ আরও ৬৬ লাখ টাকা এবং ১০ লাখ টাকা বিমোচন জরিমানা দেওয়ার আদেশ দেয়।
এছাড়া আমদানি পণ্যের চালানটি খালাসের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা আমদানি রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের ক্লিয়ারেন্স পারমিট কাস্টমসে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
গত ১১ অক্টোবর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সিয়াম এন্টারপ্রাইজের পক্ষে খান এন্টারপ্রাইজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি ছাড়পত্র সনদ কাস্টমসে দাখিল করে।
তার সঙ্গে জমা দেওয়া হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠিও যাতে বিএসটিআইয়ের ছাড়পত্র ও কাস্টমসের আরোপিত জরিমানা ও শুল্ক পরিশোধসাপেক্ষে চালানটি ছাড় দিতে বলা হয়।
কাস্টমসের এআরআই শাখা যাচাই-বাছাই করে দেখতে পায়, পণ্যছাড়ের জন্য জমা দেওয়া ক্লিয়ারেন্স পারমিটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যে ওয়েবসাইটের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে সেটি ভূয়া।
সিআইডি কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, “খান এন্টারপ্রাইজের মালিককে গ্রেপ্তারের পর জানা যায় তার ছোট ভাই গোলাম ফারুক প্রতিষ্ঠানটি দেখাশুনা করেন। পরে জানা যায়, খান এন্টারপ্রাইজের লাইসেন্স ব্যবহার করে রাসেল ও রানা নামে দুই যুবক। তাদের খুঁজতে গিয়ে সন্ধান মেলে নগরীর মোগলটুলী এলাকার বাসিন্দা আবুল খায়ের পারভেজের যিনি বন্দর-কাস্টমসকেন্দ্রিক ভূয়া নথিপত্র সৃজন করে জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত আছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভূয়া ওয়েবসাইটটি তিনি বানিয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদ থেকে জানা গেছে।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধপদবঞ্চিতরা করতে চান পাল্টা কমিটি, মাথাব্যথা নেই পদধারীদের
পরবর্তী নিবন্ধইস্পাহানি রেলগেইটে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নারী নিহত