ভারতের আসাম রাজ্যে দিল্লিগামী একটি এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত সাতটি হাতির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় মিজোরামের সাইরাং থেকে রওনা রাজধানী এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। শনিবার স্থানীয় সময় রাত ২টা ১৭ মিনিটের দিকে আসামের হোজাই এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। খবর বিডিনিউজের।
এতে একটি বাচ্চা হাতি আহত হয় ও ট্রেন পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটে। তবে ঘটনায় কোনো যাত্রী আহত হয়েছেন, এমন খবর হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এনডিটিভি লিখেছে, গভীর রাতে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের লুমডিং বিভাগের অধীনে হোজাই জেলার যমুনামুখ–কামপুর রেলপথে সাইরাং–নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস একটি হাতির পালের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে ট্রেনের ইঞ্জিনসহ পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনাস্থলটি আসামের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে প্রায় ১২৬ কিলোমিটার পূর্বে।
ঘটনার পরপরই উদ্ধারকারী ট্রেন ও রেল কর্মকর্তারা সেখানে পৌঁছে উদ্ধার ও লাইন স্বাভাবিক করার কাজ শুরু করেন। রেলওয়ের সূত্রগুলা এনডিটিভিকে জানায়, দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ৭টি হাতির মৃত্যু হয় এবং একটি বাচ্চা হাতি গুরুতর আহত হয়। তবে যাত্রীদের কেউ আহত হয়নি। ট্রেনটি মিজোরামের সাইরাং থেকে দিল্লির আনন্দবিহার টার্মিনালের উদ্দেশে যাচ্ছিল। তারা আরও জানান, ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ায় ও হাতির দেহাংশ লাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় আপার আসামে ও উত্তরপূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন অংশে ট্রেন পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার সময় শতাধিক হাতির একটি পাল রেললাইন অতিক্রম করছিল। লোকো পাইলট জরুরি ব্রেক চাপেন, কিন্তু হাতির পালের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়ানো যায়নি। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উর্ধ্বতন রেল কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্ত বগির যাত্রীদের অন্য কোচে স্থানান্তর করেন। পরে ট্রেনটি সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে গুয়াহাটির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বন বিভাগ দুর্ঘটনার পর উদ্ধার ও পুনরুদ্ধার কাজ শুরু করেছে। দুর্ঘটনার কারণে যমুনামুখুকামপুর রেলপথে সাময়িকভাবে রেল যোগাযোগ বন্ধ আছে। আসামের নগাঁও বিভাগের বন কর্মকর্তা সুভাষ কদম জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত কয়েকটি ট্রেন আপ লাইনে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এদিকে, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বিস্তারিত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, আজকের এই মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় তিনটি প্রাপ্তবয়স্ক ও চারটি শাবকসহ সাতটি হাতির মৃত্যুর ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত।
