রাঙ্গুনিয়ায় শ্রমিক দল নেতা আবদুল মান্নান হত্যাকাণ্ডের সাত দিন পার হলেও এখনো আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমনকি এখনো জানা যায়নি, তাকে কী কারণে কারা হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের একদিন পর এই ঘটনায় মামলা দায়ের করেন তার ভাই আবদুল হান্নান। তবে মামলায় নির্ধারিত কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। ফলে কারা আবদুল মান্নানকে গুলি করে হত্যা করেছে, তা এখনো রহস্যই থেকে গেছে। তবে, স্থানীয়দের ধারণা, বালির ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ কিংবা ব্যবসায়ীক দ্বন্ধে এই হত্যাকাণ্ড হতে পারে। পুলিশ বলছে, হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার ও এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
জানা যায়, গত ১৩ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে রাঙ্গুনিয়ায় অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন হন সরফভাটা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সহ–সভাপতি আবদুল মান্নান। তিনি সরফভাটা ২নং ওয়ার্ড জিলানী মাদ্রাসা এলাকার মুহিদুল্লাহ বাপের বাড়ির মো. নাজেরের ছেলে। তবে তিনি স্ত্রী–সন্তান নিয়ে চন্দ্রঘোনা ভাড়া বাসায় থাকতেন বলে জানান স্বজনরা। উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড মধ্যম সরফভাটা বুলইন্যা বাপেরবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
তার ছোট ভাই মঞ্জুর মোরশেদ জানান, আগামী ৮ ডিসেম্বর মা–বাবা ওমরাহ হজ্ব করতে যাবেন। তাই দেশে আসা সৌদিয়া প্রবাসী আবদুল মান্নান সমপ্রতি প্রবাসে ফেরার কথা থাকলেও যাননি। পরিকল্পনা ছিলো তাদেরকে সাথে নিয়ে যাবেন মান্নান। কিন্তু তার আর যাওয়া হলো না। তার আগেই ঘাতকের বুলেট কেড়ে নিলো মান্নানের জীবন।
নিহতের ভাতিজা সরোয়ার কবির জানান, তার চাচা সরফভাটা ছনাগাজী এলাকার তার দোকানের সামনে ছিলেন। এ সময় তার একটি ফোন এলে তিনি মোটরসাইকেল যোগে সহযোগী নয়নকে নিয়ে চলে যান। পরে শুনি ক্ষেত্রবাজার এলাকায় নয়নকে বসিয়ে এক্ষুনি আসছি বলে ওই স্থানে গিয়েছিলেন এবং সেখানেই দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে হত্যা করে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন তালুকদার জানান, নিহত মান্নান তার পারিবারিক আত্মীয় এবং কাছের ছোট ভাই ছিলেন। প্রবাসফেরত আবদুল মান্নান বালুসহ বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানান তিনি। সরফভাটায় মান্নানসহ নিয়মিত বিরতিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে চলেছে উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহতের আহ্বান জানান তিনি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছেন, নিহত আবদুল মান্নানের শরীরে চারটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি তার বাঁ চোখের কাছে, একটি বাঁ হাতে ও দুটি পেটের ডান পাশে।
দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম জানান, হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।












