একসময় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ‘অচ্ছুৎ’ বিবেচিত সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান গত সপ্তাহে সিরিয়াকে আরব লীগে ফিরিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে রিয়াদের ক্ষমতা বিষয়ে ওয়াশিংটনকে বার্তা পাঠিয়ে নিজেকে ফের বিশ্বমঞ্চে অন্যতম খেলোয়াড় হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হলেন।
আরব জোটে সিরিয়ার প্রত্যাবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের অনীহা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদকে উষ্ণ অভিবাদন, গালে চুমু আর প্রগাঢ় আলিঙ্গনের মাধ্যমে সৌদি যুবরাজ ভূ–রাজনৈতিক বাস্তবতায় তার অবস্থান যে এখনও একেবারেই নড়বড়ে হয়ে যায়নি তারও স্বাক্ষর রাখলেন, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। খবর বিডিনিউজের।
ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যতিব্যস্ত, তেল নির্ভরশীল বিশ্বে নিজেদের জ্বালানি সক্ষমতাকে ব্যবহার করে এমবিএস এখন সৌদি আরবকে ফের মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম নীতিনির্ধারক দেশে পরিণত করার চেষ্টা করছেন।
২০১৪ সালে সৌদি হিট স্কোয়াড সাংবাদিক জামাল খাশুগজিকে হত্যা করার পর পশ্চিমা দেশগুলো সৌদি এই ক্রাউন প্রিন্সের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল; কিন্তু নানান পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি এখন মধ্যপ্রাচ্যে এমন এক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন যে ওয়াশিংটন তাকে উপেক্ষা বা অস্বীকার তো করতেই পারছে না। উল্টো অনেক ইস্যুতেই এই যুবরাজের সঙ্গে বসতে হচ্ছে, তাকে হিসাবের মধ্যে রাখতে হচ্ছে।
সৌদি আরবের নিরাপত্তা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দেহ এবং পশ্চিমা দেশটির চোখ রাঙানিতে বিরক্ত এমবিএস এখন অন্য পরাশক্তিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে কাজ করছেন; ওয়াশিংটনের চোখ কপালে তুলে দিয়ে তিনি সৌদি আরব–যুক্তরাষ্ট্রের কমন শত্রুদের সঙ্গে নতুন সম্পর্কও দাঁড় করাতে চাইছেন।
বিশ্বমঞ্চে তার তুমুল আত্মবিশ্বাস কেবল আসাদকে অভ্যর্থনা জানানোতেই প্রকাশিত হয়নি, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির জেদ্দা সফরেও তা দেখা গেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে এমবিএস কিয়েভ আর মস্কোর মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন। তেল উৎপাদক রাশিয়ার সঙ্গে অনেক ইস্যুতেই সৌদি আরবের মাখামাখি এখন স্পষ্ট। সৌদি শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ না থাকায় এবং সৌদি আরবকে সহযোগিতা কমিয়ে দেওয়ায় রিয়াদের হাতে তেহরানের সঙ্গে চুক্তি করা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প ছিল না।