দণ্ডবিধি, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের বিভিন্ন ধারায় সীতাকুণ্ড থানায় দায়ের হওয়া পৃথক দুটি মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীসহ ১০৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছে আদালত। এর মধ্যে একটি মামলায় আসলাম চৌধুরীসহ আসামির সংখ্যা ৪৭ জন এবং অপর মামলায় আসলাম চৌধুরীসহ ৫৮ জন আসামি। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের ৫ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শরিফুর রহমান চার্জগঠনের এ আদেশ দেন। এ সময় আসলাম চৌধুরীসহ দুই মামলায় জামিনে থাকা আসামিরা কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।
জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, চার্জগঠনের মাধ্যমে আসলাম চৌধুরীসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়ে গেছে। আগামী ধার্য তারিখ থেকে দুই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, দণ্ডবিধি ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় আসামি সংখ্যা ৪৭ জন। এর মধ্যে জামিনে রয়েছেন ২২ জন। পলাতক ২৫ জন। অন্যদিকে দণ্ডবিধি ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলায় আসামি সংখ্যা ৫৮ জন। এরমধ্যে জামিনে রয়েছেন ৫৫ জন। পলাতক আছেন তিনজন।
আদালতসূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর ও ২৭ ডিসেম্বর মামলা দুটি দায়ের করে পুলিশ। ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর সীতাকুণ্ড থানার উপ–পরিদর্শক মো. সফিকুল ইসলাম কর্তৃক দণ্ডবিধি ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিভিন্ন ধারায় দায়ের করা মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের ১৬ নভেম্বর দেশব্যাপী বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় ঐক্যজোটের বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সময় স্থানীয় সিদ্দকী স্কয়ারে ১৮ দলীয় জোটের নেতা কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এই সংবাদ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়লে বটতল এলাকায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর ১৮ দলীয় জোটের নেতা, কর্মী, সমর্থকরা কিরিচ, রামদা, লোহার রড এবং লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে গাড়ি ভাংচুর করে। পুলিশের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হলে পিকেটাররা আরো উত্তেজিত হয়ে বৃষ্টির মত ইট, পাথর নিক্ষেপসহ গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এক পর্যায়ে পুলিশ ১৫ রাউন্ড গুলি করলে পিকেটাররা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
আদালতসূত্র আরো জানায়, ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর সীতাকুণ্ড থানার উপ–পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান কর্তৃক দণ্ডবিধি ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের বিভিন্ন ধারায় দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর দেশব্যাপী বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় ঐক্যজোট কর্তৃক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির উত্তরে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর পিকেটাররা চলাচলরত যানবাহন ভাংচুর করে। পুলিশের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হলে ইট পাথর নিক্ষেপ করা হয়। পাশাপাশি তিনটি ফার্নিচার দোকান এবং দোকানের পাশের দুটি বস্তিঘরের ঘুমন্ত লোকজনের উদ্দেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এতে প্রায় তিন কোটি টাকার মত ক্ষয়ক্ষতি হয়। এসব কার্যক্রম দণ্ডবিধি ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।