বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীকে নতুন একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার মহানগর হাকিম হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালত আকবরশাহ থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় এ আদেশ দেন। এর আগে সিআইডি আকবরশাহ থানার উক্ত মামলায় আসলাম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেন। আসলাম চৌধুরীর আইনজীবী নাছিমা আক্তার আজাদীকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
প্রসিকিউশন শাখার সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫/৩ ধারায় আকবরশাহ থানায় একটি মামলা হয়। মামলাটি বর্তমানে সিআইডি তদন্ত করছে।
এদিকে নাশকতা ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগের মামলায় বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীকে হাই কোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করেছে আপিল বিভাগ। জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেয়। আগামী ২০ জুন পর্যন্ত জামিন স্থগিত রেখে ওই সময়ের মধ্যে জামিন আদেশের বিরুদ্ধে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষকে। নাশকতা ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে ঢাকার কোতোয়ালী ও শাহবাগ থানার দুই মামলায় গত ৩০ মে হাই কোর্ট আসলাম চৌধুরীকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেয়।
সেই জামিন স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। কিন্তু চেম্বার আদালত হাই কোর্টের জামিন আদেশে হস্তক্ষেপ না করে গত ২ জুন রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন দুটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ। আসলাম চৌধুরীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস ও মোহাম্মদ হাসিবুর রহমান।
পরে শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, ‘আগামী ২০ জুন পর্যন্ত আসলাম চৌধুরীর জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছে।’
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি জামায়াতে ইসলামসহ সমমনা ১২ ইসলামী দল হরতাল ডাকে। এর সমর্থনে ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে কোতোয়ালী থানাধীন বাবুবাজার জামে মসজিদের সামনে থেকে মিছিল বের করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
বাবুবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পুলিশের সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়ায়। সে সময় ‘দুর্বৃত্তরা’ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং গুলি চালায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
কোতোয়ালী থানার এসআই এরশাদ হোসেনের করা ওই মামলায় ১০১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়। এরপর ২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকার খিলখেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির তৎকালীন আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীকে।
ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ‘এজেন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলাদেশে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। পরে রাষ্ট্রদ্রোহের দুই মামলা এবং নাশকতা, চেক প্রতারণাসহ বিভিন্ন মামলায় আসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।