আসছে আবেগ বোঝার প্রযুক্তি

| বুধবার , ২০ জানুয়ারি, ২০২১ at ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ

একেক মানুষ একেকভাবে মনের ভাব প্রকাশ করে। তাই একই আবেগ প্রকাশ করতে গিয়ে একেকজনের মুখের অভিব্যক্তি একেকরকম হয়। জার্মানির ফ্রাউনহফার ইন্সটিটিউট আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে এসব অভিব্যক্তি চেনার সফটওয়্যার তৈরির চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সব সংস্কৃতির মানুষই কি একইভাবে রাগ, ভালো লাগ প্রকাশ করে?
ফ্রাউনহফার ইন্সটিটিউটের ইয়েন্স গারবাস বলেন, ‘মুখের অনেক অভিব্যক্তি দেখে আবেগ বোঝা যায়। যেমন পেশীর নড়াচড়া, হাসি, রাগ, দুঃখ ইত্যাদি। বেশিরভাগ সংস্কৃতিতে বিষয়টা একই। মানুষ হিসেবে আমি মুখ দেখে যতটা আবেগ বুঝতে পারি সেটা সফটওয়্যারকেও শেখানো যায়। এবং এক্ষেত্রে সফলতার হার অনেক বেশি।’
ফ্রাউনহফারের বিজ্ঞানীরা মুখের অভিব্যক্তির ছবি দিয়ে সফটওয়্যারকে প্রশিক্ষণ দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু এটার প্রয়োজন কেন?
গারবাস বলেন, ‘একটা সাধারণ ব্যবহার হচ্ছে মেশিন ও মানুষের মধ্যে ভাব বিনিময়। যেমন এর মাধ্যমে সোশ্যাল সিগন্যাল ও মুখের অভিব্যক্তি সম্পর্কে অটিস্টিক শিশুদের প্রশিক্ষণ দিতে রোবটকে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া গাড়ি চালানোর সময়ও এর ব্যবহার আছে। চালকের মানসিক অবস্থা বোঝা, তিনি বেশি চাপে আছেন কিনা, কোনো কিছু নিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে আছেন কিনা, তা বোঝা যেতে পারে।’
ইয়েন্স গারবাস বলেন, ‘এই প্রযুক্তি দিয়ে মানুষের উপর নজর রাখা, তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। তাই এই প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। সেটা তখনই সম্ভব যখন আমরা ভালোভাবে জানবো যে, এটা দিয়ে কী করা যায়, আর কী যায় না। এছাড়া প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে থাকাটাও জরুরি।’
প্রশ্ন উঠেছে, ভবিষ্যতে ইমোশন রিকগনিশন প্রযুক্তি কাজ শুরু করলে মানুষের আচরণে পরিবর্তন আসতে পারে? আইটি বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিক মার্কুস বেকেডাল বলেন, ‘তখন আমরা ভাব প্রকাশে আরো সতর্ক হবো। ফলে স্বাধীনভাবে ভাব প্রকাশ করতে পারবো না। সবসময় মনে হবে আমাদের কেউ দেখছে। সুতরাং হাসো। নইলে ভবিষ্যতে এই ছবি তোমার বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে পারে। ইতিমধ্যে চীনে এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়া শুরু করেছে। আমার আশা, জার্মানিতে যেন কখনও এমন অবস্থা তৈরি না হয়।’ প্রসঙ্গত, চীনে ব্যাপকভাবে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। উদ্দেশ্য মানুষকে নিয়ন্ত্রণে রাখা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচাকা নেই, ভাসতে ভাসতে ট্রেন ছুটল ৬২০ কিমি বেগে
পরবর্তী নিবন্ধগত অর্থবছরের ৭৭ শতাংশ রেমিটেন্স সাড়ে ৬ মাসেই