আশেকে রাসূলদের জশনে জুলুছে অংশ নেওয়ার আহ্বান পীর সাবির শাহ’র

আনজুমান ট্রাস্টের একশত বছর ও জুলুছের ৫৪ বছর পূর্তি

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (.) উপলক্ষে আজ শনিবার চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঐতিহাসিক জশনে জুলুছ। আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের উদ্যোগে প্রতি বছরের মতো এবারও আয়োজিত হচ্ছে এ মহাসমাবেশ। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় শোভাযাত্রা হিসেবে পরিচিত এ জুলুছকে ঘিরে ইতিমধ্যে নগরজুড়ে তৈরি হয়েছে উৎসবের আমেজ, চলছে আলোকসজ্জা ও সাজসজ্জা।

জশনে জুলুছে ঈদএ মিলাদুন্নবী (.)কে সামনে রেখে গতকাল দুপুরে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে পীরে বাঙ্গাল হযরতুল আল্লামা আলহাজ্ব সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্‌ (মা.জি.) বলেন, সমগ্র সৃষ্টি জগতের জন্য করুণার দূত হিসেবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর প্রিয় হাবিব হুজুর করিম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে এ জগতে প্রেরণ করেছেন। রাসূলেপাক (.) যেহেতু সৃষ্টি জগতের জন্য রহমত, সেহেতু তাঁর শুভাগমনে ধর্মপ্রাণ মুসলমান আনন্দিত, উদ্বেলিত। তিনি পবিত্র কুরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, প্রিয় নবী উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত, দয়া ও করুণার আধার। তিনি আজ (শনিবার) চট্টগ্রামের জশনে জুলুছে ধর্মপ্রাণ আশেকে রাসূলদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, হযরত সৈয়্যদ আহমদ শাহ্‌ সিরিকোটি (রা.) আজ থেকে প্রায় ৭০ বছর আগে এ চট্টগ্রামে এসে ইসলামের প্রচার ও জামেয়া প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামের যে বুনিয়াদ দিয়েছেন, তারই ধারাবাহিকতায় পবিত্র ঈদএ মিলাদুন্নবী (.) উপলক্ষে জশনে জুলুছের আয়োজন। তিনি আনজুমান ট্রাস্টের একশত বছর ও জুলুছের ৫৪ বছর পূর্তিতে সকলকে অভিনন্দন ও ঈদের শুভেচ্ছা জানান। প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন সাহেবজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্‌ (মা.জি.) ও সাহেবজাদা সৈয়্যদ মেহমুদ আহমদ শাহ্‌ (মা.জি.)। এর আগে আনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। আনজুমান ট্রাস্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জুলুছ মিডিয়া উপকমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আমির হোসেন সোহেল স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সংবাদ সম্মেলনে আনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ আনোয়ার হোসেন জানান, জুলুছের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, শনিবার সকালে মুরাদপুর আলমগীর খানকা শরিফ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে জুলুছ। এরপর মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড় হয়ে জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা মাঠে গিয়ে শেষ হবে। সেখানে দেশবরেণ্য আলেমওলামারা বক্তব্য রাখবেন এবং শেষে দেশ ও জাতির শান্তিসমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এবারের জুলুছে নেতৃত্ব দেবেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ্‌ (মা.জি.)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শাহজাদা সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্‌ (মা.জি.) ও সৈয়দ মুহাম্মদ মেহমুদ আহমদ শাহ্‌ (মা.জি.)

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মনজুর আলম (মনজু), এডিশনাল সেক্রেটারি ও জুলুছ পরিচালনা সাবকমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ সামশুদ্দীন, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ সিরাজুল হক, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এস.এম গিয়াস উদ্দীন (সাকের), ফাইন্যান্স সেক্রেটারি মোহাম্মদ কমর উদ্দীন (সবুর), প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দীন, মুখপাত্র এড. মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার, মাসিক তরজুমানের নির্বাহী সম্পাদক অভীক ওসমান। কনফারেন্স সঞ্চালনায় ছিলেন অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল। স্বাগত বক্তব্যে আমির হোসেন সোহেল বলেন, ১৯৭৪ সালে আনজুমান রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের উদ্যোগে জশনে জুলুছের যাত্রা শুরু হয়। ধীরে ধীরে এটি শুধু বাংলাদেশের নয় বরং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ঈদে মিলাদুন্নবী (.) উদযাপনে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

এদিকে জুলুছকে ঘিরে চট্টগ্রাম নগরীর মোড়ে মোড়ে দৃষ্টিনন্দন তোরণ, পতাকা, আলোকসজ্জা ও ব্যানারের বাহার চোখে পড়ছে। পাড়ামহল্লায় চলছে মিলাদ মাহফিল ও ফাতেহার আয়োজন। ফলে পুরো নগরী এখন উৎসবের আবহে মুখরিত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘ঈদে মিলাদুন্নবীর (দ.) প্রকৃত আদর্শ খলিফায়ে রাসূল (দ.) গাউছুল আজমের (রা.) তরিক্বতে’
পরবর্তী নিবন্ধশেষ হলো মাসব্যাপী আয়ুর বিবি ট্রাস্ট ও দুরন্ত দুর্বারের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি