ইসরায়েলি পুলিশ জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে একইদিনে দ্বিতীয়বারের মতো ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এতে অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে।
গত বুধবার রাতের এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে ভোররাতে প্রথম আল আকসা প্রাঙ্গণে থাকা মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি পুলিশ। তখন ইসরায়েলি পুলিশের পিটুনি ও রবার বুলেটে ১২ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছিল। ভোরে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে সাড়ে তিনশজনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে ধরে নিয়ে
যায় পুলিশ। উত্তেজনা কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান সত্ত্বেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। খবর বিডিনিউজের। মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাস ও ইহুদিদের নিস্তার পর্বের প্রক্কালে এই সংঘর্ষ গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি রকেট ও বিমান হামলা এবং গোলাবর্ষণের কারণ হয়, যা সহিংসতায় আরও ইন্ধন যোগাতে
পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাতে দ্বিতীয় ঘটনার সময় ইসরায়েলের পুলিশ আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে মুসল্লিদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে, এ সময় তারা স্টান গ্রেনেড ও বরাব বুলেট ব্যবহার করে বলে জর্ডানের নিয়োগ করা ইসলামি ওয়াকফের কর্মীরা জানিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন,
পুলিশের হামলার প্রতিক্রিয়ায় মুসল্লিরা পাথর নিক্ষেপ করে। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৬ ফিলিস্তিনি আাহত হয়। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, বহু তরুণ মসজিদটির ভেতরে পাথর ও পটকা নিয়ে অবস্থান নেয়। আর ওয়াকফ জানিয়েছে, নামাজ শেষ হওয়ার আগেই পুলিশ মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনেহ বলেছেন, আল আকসা মসজিদে ইসরায়েলের অভিযান, মুসল্লিদের ওপর তাদের হামলা, রমজান মাসে পরিস্থিতি শান্ত ও স্থিতিশীল রাখার যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগের মুখে চপেটাঘাত। হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কারবি আল আকসা মসজিদের এ সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং উভয়পক্ষের প্রতি উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন।
তীব্র নিন্দা বাংলাদেশের : এদিকে বাংলানিউজ জানায়, আল–আকসা মসজিদে নিরীহ মুসল্লি ও বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানানো হয়।এতে বলা হয়, ৫ এপ্রিল ভোরে নামাজের সময়
দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী পবিত্র আল–আকসা মসজিদে নিরীহ মুসল্লি ও বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানায় বাংলাদেশ। ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা মৌলিক নাগরিক অধিকার, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ
করে। বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, ধর্মের স্বাধীনতাকে একটি মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে ধরে রাখতে হবে। ধর্মীয় আচার–অনুষ্ঠান পালনের অধিকার, বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে নিশ্চিত করতে হবে। ইসরায়েলি অধিকৃত অঞ্চলে বারবার এ ধরনের সহিংসতা বন্ধে টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন আবাসভূমির জন্য ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকারের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। একই সঙ্গে দ্বি–রাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে ফিলিস্তিনের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।