আজ ১১ রমজান থেকে শুরু হলো মাহে রমজানের দ্বিতীয় পর্ব মাগফিরাত দশকের। মহান আল্লাহর ইবাদত–বন্দেগিতে নিজেকে সঁপে দেওয়ার মাস মাহে রমজান। আর অন্যতম ইবাদত হচ্ছে প্রিয় নবীর (সা.) ওপর দরুদ শরিফ পাঠ। ইবাদত বন্দেগি কবুল বা গ্রহণযোগ্য করতে প্রিয় নবীজীর (সা.) ওপর দুরুদ পাঠ করা অতীব পুণ্যময় আমল। আল্লাহ পাকের অনুগ্রহ
লাভের উসিলা বলা হয় দুরুদ শরিফকে। দুরুদ শরিফ পাঠে আল্লাহ্র দরবারে ইবাদতের বিনিময় নিশ্চিত হয়। মাহে রমজানে প্রত্যেক মু’মিন মুসলমানের উচিত প্রিয়নবীর (সা.) ওপর অধিক দুরুদ পাঠ করা। কারণ, স্বয়ং আল্লাহ্ পাক তাঁর প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর সব সময় দুরুদ শরিফ পড়েন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্ তা’য়ালা ইরশাদ করেন– ‘ইন্নাল্লাহা ওয়া মালাইকাতাহু ইউসাল্লুনা আলান্ নাবী ইয়া আইয়্যুহাল্লাজীনা আমানু সাল্লু আলাইহি ওয়া সাল্লিমু তাসলীমা– ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা’য়ালা এবং তাঁর ফিরিশতাগণ নবী করীম (সা.) এর ওপর দুরুদ ও সালাম পেশ করেন এবং তোমরাও নবীজীর (সা.) ওপর দুরুদ পড়।’ [কুরআন মজিদ সূরা আহযাব, আয়াত নং ৫৬]
তাই যুগে যুগে সকল ইমাম, মুজতাহিদ, ফকীহ মুফাসসির, মুহাদ্দিস, আউলিয়ায়ে কেরাম, পীর মাশায়েখ ও সত্যিকার মু’মিন মুসলমান নিজেদের জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দুরুদ শরিফ পাঠ ও লিখনীতে ব্যয় করেছেন। এতে প্রত্যেকেই দু’জাহানের কামিয়াবি অর্জন করেছেন। কুরআন হাদীসের আলোকে প্রিয় নবীর (সা.) নানা গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে তাঁদের লিখিত দুরুদ শরিফে। বিশেষ করে মা’য়ারিফে লাদুন্নিয়ার প্রস্রবণ হযরত খাজা আবদুর রহমান চৌহরভী (রা) কর্তৃক রচিত ‘মুজমুয়ায়ে সালাওয়াতে রাসূল’ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামে দুরুদ শরিফ সংকলনটি বিশ্বের ইতিহাসে অতুলনীয়। ত্রিশ পারার এ দুরুদ গ্রন্থটি সারা বিশ্বে আজ সমাদৃত ও বহুল পঠিত। মজমুয়ায়ে সালাওয়াতে রাসূল (সা.) দুরুদ গ্রন্থটিতে ইশকে রাসূল (সা.) বা নবী প্রেমের আবেগ, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার সেরা নজরানা স্বরূপ এবং হযরত খাজা আবদুর রহমান চৌহরভীর (রহ) আধ্যাত্মিক চিন্তা–চেতনা ও বুজুর্গ সত্তাই ফুটে উঠেছে। দুরুদ শরিফ পাঠের ফজিলত বর্ণনাতীত। হাদীস শরিফে রয়েছে ‘যে ব্যক্তি প্রিয়নবীর (সা.) ওপর মাত্র একবার দুরুদ শরিফ পড়বে আল্লাহ্ তা’য়ালা তার ওপর দশবার রহমত নাযিল করবেন। এবং কমপক্ষে তার দশটি গুনাহ মাফ করবেন, তার আমলনামায় দশটি সওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন এবং আল্লাহ্র দরবারে তার মর্যাদা দশগুণ বৃদ্ধি পাবে।’ অপর এক হাদীসে আছে ‘কোনও দোয়াই আল্লাহ্র দরবারে কবুল হয় না যতক্ষণ না সে দু’আর আগে ও পরে প্রিয়নবীর (সা.) ওপর দরুদ শরিফ পড়া না হয়।’