আনজুমান–এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় গতকাল শুক্রবার আওলাদে রাসুল, রাহনুমায়ে শরীয়ত ও ত্বরিকত আল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ.)’র খেতাবতে ও ইমামতিতে এবারের সফরের শেষ নামাজে জুমা ষোলশহরস্থ জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন জুলুস ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়। দরবারে আলিয়া কাদেরিয়া সিরিকোট শরীফের সাহেবজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ (মা.জি.আ.) নামাজ আদায় করেন। জুমার নামাজ শেষে আল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা. জি.আ.)’র হাতে দু’জন ব্যক্তি ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেন। হুজুর কিবলা তাদের নাম রাখেন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ ও মুহাম্মদ আরিফ। এরপর হাজার হাজার মুসল্লী সিলসিলায়ে আলীয়া কাদেরিয়া ত্বরিকায় দীক্ষিত হন।
আল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ.)’র বলেন, এ সিলসিলায় যারা অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন তাদের মোবারকবাদ জানাই। আজ যারা তাওবাহ্ করেছেন তাদের ছোট–বড় সকল গুণাহ আল্লাহ্ ক্ষমা করে দেবেন। তবে যারা জুলুম করেছে, পরের হক ধ্বংস করেছে তাদের গুনাহ মাফ হবে না, যতক্ষণ না হক্বদার ক্ষমা করে দিবেন না। আজ সিলসিলায় যারা প্রবেশ করেছেন মহান আল্লাহ্ তাদের সবাইকে কবুল করেছেন। মনে রাখবেন, তাওবাহর মাধ্যমে শুধু গুনাহ্ মাফ হয়, আল্লাহ্ ও রাসূলের সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব। তবে, আল্লাহ্–রাসূলের নির্দেশিত পথ ও মতে চলতে হবে। আল্লাহ সবসময় তাঁর বান্দাদের কল্যাণই চান তবে প্রথমে আল্লাহর বান্দাদের ভালোবাসতে হবে। কোনো বান্দা অপরের হক ধ্বংস করলে অন্যায় ও অবিচার করলে আল্লাহ্ সে বান্দাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন না। তিনি মুসলমানদের নিজেদের দায়িত্বের প্রতি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা, সম্প্রীতি ও সৌহার্দের মাধ্যমে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করতে পারে। মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় হাবীব (দ.) কে রহমাতুল্লিল আলামীন করে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। নবীজির দয়া ও ভালোবাসায় সৃষ্টিজগৎ সিক্ত হয়েছে, সারা পৃথিবী মুসলমানদের আয়ত্বে নিয়ে এসেছিলেন। আমাদের উম্মত হিসেবে নবীজির আদর্শকে অনুসরণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মিলাদুন্নবী (দ.)’র আয়োজনের মধ্যে সিরাতে রাসূল চর্চা হয়ে যায়। ১২ রবিউল আউয়াল নবীজির বিলাদত শরীফ মিলাদুন্নবী (দ.) হবে, তবে সেখানে সিরাতের চর্চা হবে। মুসলমানরা সবসময় সিরাত অনুসরণ করবেন– এটিই নিয়ম। কিন্তু আয়োজন হবে মিলাদ। যারা মিলাদকে অস্বীকার করে, তাদের দুর্ভাগা হিসেবে আলোচিত করে সূরা ইখলাসের আয়াত উল্লেখ করে বলেন, আল্লাহ্ এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর কোনো জন্ম নেই, তাঁর থেকে কেউ জন্মও নেন নি; তিনি একমাত্র স্রষ্টা–রব। আল্লাহর মিলাদ হয় না, কিন্তু আল্লাহর বন্ধুর মিলাদ হয়। হাবিব (দ.) রাহমাতুল্লিল আলামীনের মিলাদ হয়। সুতরাং কেউ যদি মিলাদকে শিরক বলে তারা বিভ্রান্ত। তারা শিরকের অর্থ বুঝে না। তিনি মানব জীবনের সর্বক্ষেত্রে নবীজীর মানবিক আদর্শ অনুসরণ করার আহ্বান জানান।
জুমার নামাজে উপস্থিত ছিলেন, আনজুমান ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, এডিশনাল সেক্রেটারী মুহাম্মদ সামশুদ্দিন, জয়েন্ট সেক্রেটারী মুহাম্মদ সিরাজুল হক, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী এস এম গিয়াস উদ্দিন শাকের, অর্গানাইজিং সেক্রেটারী মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম, কেন্দ্রীয় গাউসিয়া কমিটির চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, আনজুমান ট্রাস্টের সদস্য মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন চৌধুরী, মুহাম্মদ নুরুল আমিন, মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, মুহাম্মদ তৈয়বুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, আবদুল হামিদ, আবদুল হাই মাসুম, মুহাম্মদ কমর উদ্দিন সবুর, মুহাম্মদ মাহবুব ছাফা, গাউসিয়া কমিটির মধ্যে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার, মুহাম্মদ মাহবুব খান, এস এম মাহবুব এলাহী সিকদার, আর ইউ চৌধুরী শাহীন প্রমুখ।
দায়েম নাজির জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল আসাদ মুহাম্মদ জুবাইর রজভীর সঞ্চালনায় এতে তাকরীর করেন হাফেজ মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান আলকাদেরী, হাফেজ গোলাম কিবরিয়া, ক্বারী মুহাম্মদ ইব্রাহীম।
শেষে হুজুর কিবলা আল্ল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্্ (মা.জি.আ.) বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করে দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।