আলো আর ছায়া তারা দুভাই। আলো বলে আয় ছায়া। আমরা দুজন মিলেমিশে গান গাই। দুজন একসাথে থাকি। আমার আড়ালে তুই। তোর আড়ালে আমি। আমি যখন আলোয় ভরা তখন তুই আমার প্রতিবিম্ব হয়ে থাকবি। আমি একপা দিলে তুইও একপা ফেলবি। আমার পিছেপিছে হাঁটবি।অথবা সামনে ও যেতে পারিস – সমস্যা নেই। আমায় পথ দেখাবি ভাই।
ছায়া বলে– তাতো অবশ্যই। আমরা দুজন মিলেমিশে আলোছায়া। ছায়া হয়েছি বলে অনেকেই আমাকে করুণা করে। তিরস্কার করে। তাতে মন খারাপ হয় মাঝেমাঝে।
না ভাই ছায়া।মন খারাপের কিছুই নেই।মানুষ তো কতো কিছুই বলে। তাদের সব কথায় গুরুত্ব দিতে নেই ভাই ছায়া।তুই ছাড়া আমি চলব কি করে। মন খারাপ করিস না। এই বলে আলো ছায়াকে জড়িয়ে ধরলো বুকে। তাতেই ছায়ার চোখ টলমল পানিতে ভেসে গেলো।
গনগনে দুপুর। ঘর থেকে বের হলো তারা দুভাই। আলো কে খানিক তফাৎ রেখে হাঁটতে লাগলো ছায়া। দেখলো মাঠের কাজ শেষ করে কৃষক গাছের ছায়ায় বসে দুপুরের খাবার খাচ্ছে। আহা কি, যে প্রশান্তি। কত যে সুখ।দেখেই মন ভরে গেলো। চোখ দুটো জুড়িয়ে গেলো যেন।খাওয়া শেষে মাথার গামছা বিছিয়ে শুয়ে পড়লো পরম নিশ্চিন্তে। মাঠে গরু ছেড়ে দিয়ে রাখাল বালকটাও বটগাছটার নীচে বসে মনের সুখে বাঁশী বাজাচ্ছে।
বটের বড় বড় পাতার বাতাসে প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে রাখালের। তার বাঁশীর সুরে দূর দূরান্তরে পাখ পাখালীরা উড়ে উড়ে আসতে লাগলো বট গাছের ডালে। মুগ্ধ হয়ে তারা রাখালের বাঁশি শুনতে লাগলো। তাদের কিচিরমিচির গেলো বন্ধ হয়ে।ছায়া ও বটের ছায়ায় মিশে গেলো নিমিষেই। আরও ঘন আরও প্রগাঢ় ছায়া হয়ে রাখালকে কৃষক কে ছায়ায় ঘিরে রাখলো। ফুরফুরে বাতাসে তপ্ত দুপুরে বটের ছায়ায় আলো আর ছায়া খেলতে লাগলো এক হয়ে মিলমিশে।বড় বড় বটের পাতারা বাতাসে দুলছে ছায়া আর আলোর মিতালি–তে।