অবশেষে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে বহুল প্রতিক্ষিত পার্বত্য অববাহিকার মাতামুহুরী নদীর শাসন ও সংরক্ষণ তথা নদী প্রকল্প। আগামী ২০২৫ সালে কাজ শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকারের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা মাঠপর্যায়ে নদীর অববাহিকার বিষয়ে চূড়ান্ত জরিপ শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার চকরিয়ায় অংশীজনদের নিয়ে দিনব্যাপী সভা করেছেন জাইকার প্রতিনিধিরা।
মাতামুহুরী নদীর অববাহিকায় বন্যা ঝুঁকি এবং নদী ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা শীর্ষক এই সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সংসদ সদস্য জাফর আলম, ভাইস চেয়ারম্যান মকছুদুল হক চুট্টু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান, এসি ল্যান্ড রাহাত উজ–জামান, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের মধ্যে উপ–বিভাগীয় প্রকৌশলী ইশতিয়াক নয়ন, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী–পেশার নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
প্রকল্পের বিষয়ে জাইকার বিশেষজ্ঞ দলের মধ্যে সবিস্তারে তুলে ধরেন জাইকার উপদেষ্টা মরিমাসা তিসুদা, দলনেতা তাদানুরি কিটামুরা, নদী অববাহিকা বিশেষজ্ঞ তাকাসি ফুরুকাওয়া, হাইড্রোলজিস্ট বিশেষজ্ঞ হিরুমাসা অওকি, পরিবেশ–প্রতিবেশ বিশেষজ্ঞ কইয়োকো মিসহিমা প্রমূখ। সভায় জানানো হয়– আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই জরিপ কাজ অব্যাহতভাবে চলবে। সামগ্রিক প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত ভূমিকা, মাতামুহুরী নদীর অববাহিকায় সমীক্ষার রূপরেখা, কার্যক্রমের কর্মসূচি, কমিউনিটি ইন্টারভিউ সার্ভের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয় জাইকার পক্ষ থেকে।
বলা হয়– মাতামুহুরী নদীর অববাহিকার উৎস, পানি সংরক্ষণ, নদীর দুই তীর টেকসইভাবে সংরক্ষণ, আকষ্মিক বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির ভয়াবহতা রোধকল্পে এই ‘নদী প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ–বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ইশতিয়াক নয়ন জানান– জাইকার অর্থায়নে এই নদী প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। টেকসই নদী ব্যবস্থাপনার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ অনুযায়ী এই প্রকল্প বাস্তবায়ের ওপর জোর দেওয়া হবে। সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তিগত সহযোগীতায় এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পের সব দিক জরিপ কাজ শেষ করে ২০২৫ সালে কাজ শুরু করা হবে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান দৈনিক আজাদীকে বলেন, এই সভা থেকে জাইকার প্রতিনিধিরা ধারণা নিয়েছেন বন্যা ও ভাঙনের কারণে কী কী সমস্যা হয়। এর কারণগুলো নির্ণয় করাসহ বন্যা–ভাঙনের ঝুঁকি রোধে কাঠামো ও অবকাঠামোগত কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল এবং ভবিষ্যতে এই ঝুঁকি নিরসনে কী কী উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।’ ইউএনও বলেন, সভায় যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি উঠে এসেছে, তার ওপর ভিত্তি করে সরকারের ডেল্টা প্ল্যানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই এই ‘নদী প্রকল্প’ বাস্তবায়িত হবে’।