দেশের আলেমরা শুধু মসজিদের নয়, জাতিরও নেতৃত্ব দেবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। আলেমরা সমাজ পরিচালনায় অংশ নিলে দেশ থেকে সব ধরনের দুর্বৃত্তায়ন দূর হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল শনিবার দুপুরে মগবাজারে আল–ফালাহ মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় উলামা কমিটির ‘দাঈ ও ওয়ায়েজ সম্মেলনে’ তিনি এমন অভিমত তুলে ধরেন। খবর বিডিনিউজের।
জামায়াতে ইসলামী ধর্মের নামে জাতিকে বিভক্ত করার পক্ষে নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা ঠিক, দেশের সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী ৯০ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মুসলমান। আর বাকিরা হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান। কিন্তু আমরা এখানে ধর্মের নামে জাতিকে বিভাজিত করার পক্ষে নই। আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি দেখতে চাই। বাংলাদেশে আমরা হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান দশকের পর দশক ধরে মিলেমিশে বসবাস করে আসছি। দুনিয়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে কয়টি দেশ আছে উল্লেখ করার মতো, বাংলাদেশ সেই জায়গায় বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
জামায়াতের আমির বলেন, মানুষের সামনে বিভিন্ন ধর্ম–মত আছে। আল্লাহ মানুষকে বিবেকে শানিত শক্তি দিয়েছেন। মানুষ তার বিবেচনা ও বিবেকের জায়গা থেকে সে ধর্মকে গ্রহণ করবেন। জাতি সংকটে পড়লে আলেম বা শিক্ষিত ব্যক্তিদের পথ দেখাতে হয় মন্তব্য করে শফিকুর রহমান বলেন, তারা হবেন জাতির রাহবার। স্বাধীনতার এত বছর পরও দেশে মানবিক, দায়িত্বশীল আর সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কাজেই জাতি সংকটে আছে। কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে ওলামায়ে কেরাম পথ দেখালে জাতি উপকৃত হবে। জাতিও তাদের কাছ থেকে সেটাই প্রত্যাশা করে। পরস্পরবিরোধী দ্বন্দ্বে লিপ্ত না হয়ে দেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতে আমির বলেন, বাংলাদেশের আলেমরা শুধু মসজিদের নেতৃত্ব নয়, জাতিরও নেতৃত্ব দেবে। দেশের আলেমরা সমাজ পরিচালনায় অংশ নিলে দেশ থেকে সব ধরনের দুর্বৃত্তায়ন দূর হবে। আমার বলতে কোনো দ্বিধা নেই, শিক্ষিত সমাজের সবাই নয়, কিন্তু শিক্ষিত সমাজের একটি অংশ যে ক্ষতি জাতির করে, সাধারণ দেশবাসীর কোটি কোটি মানুষ মিলেও সেই ক্ষতি জাতির করতে পারে না; এ যোগ্যতা তাদের নেই। কলমের খোঁচায় একজন মানুষের, জাতির কিসমত (ভাগ্য) যেভাবে ধসে পড়ে, কোটি মানুষ একত্র হয়েও সেই ক্ষতি করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রেও ওলামায়ে কেরামের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে জাতিকে জাগ্রত করার, সতর্ক করার।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বক্তব্য রাখেন।