আর নয় পড়ার চাপ, আর নয় পরীক্ষা!

সুলতানা কাজী | মঙ্গলবার , ৩১ অক্টোবর, ২০২৩ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

পরীক্ষার আগে বাচ্চাদের অভিভাবকদের পাগল পাগল অবস্থা হয়। আমি আমার কথা বলি। বাচ্চাদের পাহারা দেয়া থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ সামলাতে গিয়ে মাথা মাঝে মাঝে হ্যাং হয়ে যায় আমার! তাড়াতাড়ি পড়ো, তাড়াতাড়ি করো, তাড়াতাড়ি ওঠো, তাড়াতাড়ি খাও….। এটা আমার নিত্য বুলি! কিচেন থেকেও তাড়াতাড়ি তাড়াতাড়ি করতে করতে আমি তো হাঁফিয়ে ওঠিই, প্রতিবেশীরা কী বলে কে জানে! এসবে আবার আমার কোনো মাথাব্যথা নেই! ছোটো মেয়েই আমার তাড়াতাড়ি বলার বদঅভ্যাসটা আঙ্গুল দিয়ে ধরিয়ে দেয় প্রায়ই। ও বলে, তুমি সারাক্ষণ তাড়াতাড়ি তাড়াতাড়ি করো নাতো! ভালো লাগে না শুনতে! আমি চুপ হয়ে থাকি। পাহারাদার হতে খুব বিরক্ত লাগে আমার। কী আর করা, পরীক্ষা বলে কথা!

এই যে পরীক্ষা পরীক্ষা করে বাচ্চার সাথে অভিভাবকরাও যে বছর বছর পাগল হচ্ছি, তার জন্য দেখি কেউ একটু বিরক্তিও প্রকাশ করে না কোনোদিন! আমরা সইতে সইতে সওয়া জাতি! আমাদের অভ্যাস কলুর বলদের মতো খাটা! বাচ্চা শব্দ করে না পড়লে ভাবি, বাচ্চা তো রসাতলে গেলো! ব্যাঁব্যাঁ ক্যাঁকাঁ করে না পড়লে আমি কোনো পড়াই মুখস্থ করতে পারতাম না! আমাদের সময় প্রায় সবারই একই অভ্যাস ছিলো হয়তো। মাবাবারাও প্রেসারাইজড করতেন, জোরে জোরে পড়ো! যতো আওয়াজ করে পড়তাম, বাবামা খুশি হয়ে যেতেন! দিনশেষে দেখা যেতো, পরীক্ষার পর সব আসমানে ওঠে যেতো! তা যদি না হতো, যা পড়েছি মনে নেই কেনো কিছুই এখন! আমি অন্তত এ কারণে খুশি যে, আগামী বছর থেকে তাড়াতাড়ি তাড়াতাড়ি করে মাথা পাগল হবে না আমার! পড়া পড়া আর পড়া! বাঁচা গেলো। আমি চিন্তা করছি, আমরা সহজকে সহজ না ভেবে কঠিন ভাবতে শিখি কেনো? নতুনকে গ্রহণ করতে রাজি না কেনো? যদিও নতুন নতুন অন্যান্য সব জিনিস আগেই বগলদাবা করে বাহাদুরি দেখানোতে বেশ সিদ্ধহস্ত আমরা! প্রযুক্তি থেকে শুরু করে সব নতুনের জয়গান আমাদের। পুরাতনকে ফেলে সব, সব নতুন চাই! শুধু

পূর্ববর্তী নিবন্ধশচীনদেব বর্মণ : কিংবদন্তী কণ্ঠশিল্পী
পরবর্তী নিবন্ধপোস্ট অফিসে হয়রানি বন্ধ করুন