সীমান্তে আর কোনো নিরপরাধ বাংলাদেশির হত্যা কেউ দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেছেন, আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট বার্তা, আগামীর যে বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশের যে পররাষ্ট্রনীতি হবে, সেটিও হবে ছাত্র–জনতার মতামতের ওপর ভিত্তি করে। আমরা কি ওই স্বামী–স্ত্রীর পররাষ্ট্রনীতি চাই? স্পষ্ট বার্তা–আমাদের চারপাশে সীমান্ত রয়েছে, এই সীমান্তে আমার একজন নিরপরাধ ভাই–বোনকে আমরা আর ওই ফেলানীর মত ঝুলে থাকতে দেখতে চাই না। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, যদি আজকের পর থেকে এমন কোনো ঘটনা ঘটে, তাহলে হয় তার উপযুক্ত বিচার করতে হবে; নাহলে বাংলাদেশের ছাত্র–জনতা বিজিবি থেকে শুরু করে যারা যারা সম্ভব, তারা সবাই মিলে কিভাবে ওই রাষ্ট্রগুলোকে জবাব দিতে হয়, সেটি আমাদেরকে একসঙ্গে আবার দেখিয়ে দিতে হবে।
গতকাল শনিবার বিকালে ঠাকুরগাঁও শহরের বড় মাঠে ‘দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র–নাগরিক মতবিনিময় সভায়’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ দেশে ফ্যাসিবাদি সিস্টেম চালু করেছে এবং তা সবাইকে প্রভাবিত করেছে জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে যখন আমি প্রথম ঢুকি, তখন শুনি, এখানে নাকি মামলা–মামলা খেলা চলছে। টাকার বিনিময়ে মামলায় নাম দেওয়া হয়, আবার টাকার বিনিময়ে মামলা থেকে নাম কাটা হয়। তিনি প্রশ্ন রাখেন, এই কারণে কী ছাত্র–জনতা অভ্যুত্থান করেছিল? ছাত্র–জনতা তার জায়গা থেকে কোনো নির্দোষ, সে যে দলেরই হোক না কেন, তাকে শাস্তি দেওয়া–হয়রানি করা, মামলা দেওয়া এই বিষয়গুলো ছাত্র–জনতা সমর্থন করে না। বাংলাদেশে যা কিছু হবে ছাত্র–জনতার রায়ের ভিত্তিতেই হবে, কোনো পরিবার বা ফ্যাসিবাদি সিস্টেম থেকে নয়–এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে একজন সুইপার, একজন দারোয়ান, একজন নৈশ্যপ্রহরী নিয়োগ দেওয়ার জন্য ২০ লাখ টাকা নেওয়া হয়; ঠাকুরগাঁওয়ের ছাত্র–সমাজ একটা জিনিস মনে রাখবেন, এই যে মানুষটি ২০ লাখ টাকা দিয়ে এই সিস্টেমে ঢুকছে, সে অবশ্যই তার কয়েকগুন টাকা আপনার পকেট থেকে রক্তচোষা সিন্ডিকেটের মত চুষে নিয়ে তারপর বের হবে। এই ক্ষতির ফল কাকে ভোগ করতে হবে? আমার সামনে আপনারা বসে আছেন আপনাদেরকেই এই ক্ষতির ফল ভোগ করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা যদি আমাদের ঘর থেকে এই নোংরা সিস্টেমগুলোকে, এই মানুষগুলোকে ত্যাগ করতে পারি, উপেক্ষা করতে পারি এবং সরিয়ে রাখতে পারি; আমি আপনাদেরকে বলে দিচ্ছি– যে সিস্টেম সংস্কারটি ঘর থেকে শুরু হবে সেটি একদিন সমাজে পৌঁছাবে, জেলায় পৌঁছাবে, বিভাগে ও রাষ্ট্রে পৌঁছাবে; আর তখনি আমরা যে রাষ্ট্রের সংস্কার চাচ্ছি সেটা হবে। সামনের বাংলাদেশের আপনাদের মত মেধাবীদের অবশ্যই ওই সংসদের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে।