বিতর্কিত অঞ্চল নাগোরনো–কারবাখকে কেন্দ্র করে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে দ্বিতীয় দিনের মতো তীব্র গোলাগুলি চলছে। সোমবার উভয়পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে ভারী গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
২০১৬ সালের পর থেকে দেশ দুটির মধ্যে এটিই সবচেয়ে তীব্র লড়াইয়ের ঘটনা। এতে দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশ্ব বাজারে তেল ও গ্যাস সরবরাহকারী পাইপলাইন ওই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। নাগোরনো–কারাবাখ আজারবাইজারের ভিতরে হলেও আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠীর লোকজন অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। খবর বিডিনিউজের।
জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় গতকাল সোমবার আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ আংশিক ‘মিলিটারি মোবিলাইজেশন’ এর ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগের দিন রোববার আর্মেনিয়া পূর্ণ ‘মিলিটারি মোবিলাইজেশন’ এর ঘোষণা দিয়েছিল বলে জানা গেছে। বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাঙকে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি তাদের ২০০ সেনা আহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন।
নাগোরনো–কারাবাখ জানিয়েছে, তাদের আরও ২৩ জন সেনা নিহত হয়েছেন। রোববার আজারবাইজানের বাহিনীর কাছে তারা যেসব এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল সেগুলো পুনরুদ্ধার করেছে বলেও দাবি করেছে। আজারবাইজানের বাহিনী বিভিন্ন এলাকায় ভারী গোলাবর্ষণ করছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।
রোববার নাগোরনো–কারাবাখ তাদের ১৬ জন সৈন্য নিহত ও শতাধিক সৈন্য আহত হয়েছে বলে জানিয়েছিল। আজারবাইজান বিমান ও গোলন্দাজ হামলা শুরু করার পর এরা হতাহত হয় বলে জানিয়েছিল তারা। অপরদিকে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, আর্মেনিয়ার বাহিনীগুলো টার্টার শহরে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করছে। নাগোরনো–কারবাখ অঞ্চল নিয়ে খ্রিষ্টান প্রধান আর্মেনিয়া ও মুসলিম প্রধান আজারবাইজানের মধ্যে চার দশক ধরে বিরোধ চলছে। দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর উত্তেজনা প্রশমণে বিভিন্ন দেশ কুটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে। চীন ও রাশিয়া উভয়পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। আর্মেনিয়ার ঐতিহ্যগত মিত্র রাশিয়া আশু যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। অপরদিকে আঞ্চলিক শক্তি তুরস্ক জানিয়েছে, তারা তাদের চিরাচরিত মিত্র আজারবাইজানকে সমর্থন দিবে।
একসময় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান, উভয় দেশই সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর দেশ দুটি স্বাধীন হয়। তারপর থেকে নাগোরনো–কারবাখ অঞ্চল নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে আছে দুই প্রতিবেশী।