মহামারীর কারণে ব্যাংকের পর আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদেরও বছরজুড়ে কিস্তি না দিলেও খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হতে হবে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অর্থাৎ ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকেরাও ঋণ পরিশোধে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন। এতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকেরা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণের কিস্তি শোধ না করলেও খেলাপি হবেন না। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ব্যাংকের গ্রাহকদেরও একই ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদেরও সেই একই ছাড় দেওয়া হলো। খবর বিডিনিউজের।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে কোনো গ্রাহক কিস্তি পরিশোধ করতে না পারলে আগামী জানুয়ারি থেকে ওই কিস্তির পরিমাণ ও সংখ্যা পুনরায় নির্ধারণ করতে পারবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ যারা চলতি বছরে ঋণ শোধ করবেন না, তাদের আগামী বছর থেকে কিস্তির সংখ্যা ও পরিমাণ নির্ধারণ করা যাবে। যতসংখ্যক কিস্তি বকেয়া থাকবে, ঠিক ততসংখ্যক বাড়ানো যাবে। ঋণের উপর সুদ হিসাবের ক্ষেত্রে কোনো দণ্ড সুদ বা অতিরিক্ত কোনো অর্থ আদায় করা যাবে না।
বর্তমানে দেশে ৩৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গত জুনের শেষে এসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১৩ দশমিক ২৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বিডিনিউজকে বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীতে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে যারা ঋণ শোধ করতে পারছেন না, তাদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এর আগে ব্যাংকের গ্রাহকেদের এই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদেরও সেই একই সুযোগ দেওয়া হলো। দেশের অর্থনীতিতে করোনাভাইরাস মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় গত ১৯ মার্চ জারি করা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, ১ জানুয়ারি ২০২০ ঋণের শ্রেণিমান যা ছিল, আগামী ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত সময়ে ওই ঋণ তার চেয়ে বিরূপমানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না। পরে ১৫ জুন অপর এক সার্কুলারে সেই সময় আরও তিন মাস বাড়িয়ে বলা হয়, সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত কোনো ঋণের শ্রেণিমান পরিবর্তন করা যাবে না।