আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন প্রশংসার দাবি রাখে

| মঙ্গলবার , ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৭:০২ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে চলেছে। বর্তমান সরকারের শাসনামলে গত দুই দশকে বাংলাদেশের এ সাফল্য আশাতীত। বলা যায়, আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। হংকং সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন এইচএসবিসির গ্লোবাল রিসার্চে বলা হয়েছে, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) নিরিখে বিশ্বের ২৬তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান ৪২তম। ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ইন ২০৩০: আওয়ার লং-টার্ম প্রজেকশনস ফর ৭৫ কান্ট্রিজ’ শিরোনামের এ রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, ২০১৮ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে অবস্থানের দিক থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ১৬ ধাপে উন্নীত হবে; যা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় অধিক। অর্থনৈতিক উন্নয়নের এ তালিকায় বাংলাদেশের পরেই ফিলিপাইন, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার নাম এসেছে। প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক থেকে উন্নত দেশ নরওয়ের চেয়েও বাংলাদেশের অধিক সম্ভাবনা রয়েছে বলে এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর সবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও কার্যকর অর্থনৈতিক পদক্ষেপের ফলে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা প্রধানমন্ত্রীকে বর্তমান বিশ্বের একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে মন্তব্য করেছেন। তাদের মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দক্ষতা ও বিচক্ষণতা দিয়ে এখন বিশ্বমানের নেত্রীর পর্যায়ে নিজের স্থান করে নিয়েছেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন এক ব্যক্তিত্ব, যাঁকে ঝড়-ঝঞ্ঝা, হুমকি-ধমকি কোনোটিই টলাতে পারেনি। বিচক্ষণতার সঙ্গে দেশ ও জনগণের স্বার্থে যেটা যখন প্রয়োজন- করেছেন সাহসের সঙ্গে। বিডিআর বিদ্রোহের মতো দেশবিরোধী চক্রান্ত, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, রাজনৈতিক অরাজক পরিস্থিতি ও সরকার উৎখাতে নানা আন্দোলনকে ব্যর্থ করে দিয়েছেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনা মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছেন তিনি। সরকারকে দাঁড় করিয়েছেন মজবুত ভিত্তির ওপর। দলকে টানা তিনবার ক্ষমতায় আনতে সক্ষম হয়েছেন। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও কূটনৈতিক দক্ষতা দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের জন্য কুড়িয়েছেন সুনাম। দেশের জন্য বয়ে এনেছেন গৌরব ও সাফল্য। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জাতিসংঘের মতো শক্তিধর সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রের চাপ মোকাবিলা করেছেন। ভারতের মতো বৃহৎ প্রতিবেশীর কাছ থেকে দেশের পক্ষে ন্যায্য অধিকার আদায় করেছেন।
বর্তমান সরকার ও সরকারি দল আওয়ামী লীগ নিয়ে জনমনে বিস্তর অভিযোগ থাকলে ব্যক্তি শেখ হাসিনা রয়েছেন এসবের ঊর্ধ্বে। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতার বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক নানা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যম তাকে বিশ্বের প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর নেতার স্বীকৃতি দিয়েছে। দেশের প্রতিষ্ঠিত একাধিক গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংস্থার জরিপেও দেখা গেছে, ধারাবাহিকভাবে শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন তাঁর এক লেখায় বলেছেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে রয়েছে বাংলাদেশ। গত কয়েক দশকে দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানসহ আয়স্তর বেড়েছে। বেড়েছে গড় আয়ু, কমেছে মৃত্যুহার। নারী ও শিশু উন্নয়নে ব্যাপক অগ্রগতি লাভ করেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব নারী ও শিশু উন্নয়নে বাংলাদেশের সাফল্যের কথা উল্লেখ করেছেন তার বাণীতে। শিশুমৃত্যু হার কমানো, স্যানিটেশন বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যে অর্জন হয়েছে, তার প্রশংসা করেছেন। শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ আজ দারিদ্র্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দারিদ্র্য নিরসনের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি মিলছে বিশ্বজুড়ে। দ্রুত দারিদ্র্য বিমোচনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে যেসব দেশ, তার মধ্যে বাংলাদেশ এখন ৩ নম্বরে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপি প্রকাশিত ‘মাল্টিডাইমেনশনাল পভার্টি ইনডেক্স ২০১৯’-এ উঠে এসেছে বাংলাদেশের সাফল্যের এ চিত্র। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য এসডিজিতে যে ১৭টি লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে, তার প্রথমটি হলো দারিদ্র্য বিমোচন। ২০৩০ সালের মধ্যে সব জায়গা থেকে ‘বহুমাত্রিক’ দারিদ্র্য দূর করার কথা বলা হয়েছে সেখানে। এ লক্ষ্য অর্জনে জাতিসংঘ অধিভুক্ত দেশগুলোর সক্ষমতা ও অগ্রগতি পর্যালোচনা ও বোঝার একটি কৌশল হলো ‘মাল্টিডাইমেনশনাল পভার্টি ইনডেক্স’ বা এমপিআই। এর ভিত্তিতেই বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত দারিদ্র্য নিরসন করছে এমন তিনটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। অন্য দুটি দেশ হলো ভারত ও কম্বোডিয়া। বাংলাদেশ ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ মানুষকে দারিদ্র্যসীমার বাইরে আনতে সক্ষম হয়েছে।
অস্বীকার করার উপায় নেই যে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। তার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে এরই মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহু সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। আমরা দেশের এই অগ্রযাত্রাকে অভিনন্দিত করতে চাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৭৮৬
পরবর্তী নিবন্ধএই দিনে