আরো ৫ কর্মদিবস সময় চায় স্বাস্থ্য বিভাগের তদন্ত কমিটি

জেনারেল হাসপাতালে জালিয়াতির মাধ্যমে বিল ছাড়ের চেষ্টা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৫ জুলাই, ২০২২ at ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ

ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্র তৈরি করে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার বিল ছাড়করণের চেষ্টার ঘটনায় স্বাস্থ্য বিভাগের গঠন করা তদন্ত কমিটি আরো ৫ কর্মদিবস সময় চেয়েছে। গতকাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বরাবর সময় বৃদ্ধির এ আবেদন জানিয়েছে তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির সভাপতি ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তরের উপপরিচালক ডা. সাখাওয়াত উল্ল্যাহ আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রসঙ্গত, ২০২১২০২২ অর্থ বছরে সংশোধিত বাজেটে চিকিৎসা যন্ত্রপাতি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ হতে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ২০১৩১৪ অর্থ বছরের মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজ কর্তৃক সরবরাহকৃত ৮টি আইসিইউ বেড, ৮টি ভেন্টিলেটর ও ১টি কার্ডিয়াক পেশেন্ট মনিটরের বকেয়া বিল বাবদ ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার ব্যয় মঞ্জুরি আদেশ জালিয়াতির মাধ্যমে ছাড়করণের চেষ্টা হয়। গত ২৮ জুন জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষক মো. ফোরকান এ বিল ছাড়করণের চেষ্টা চালান। বিষয়টি ধরা পড়ায় বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে মো. ফোরকানকে পাঁচলাইশ থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। পরে তাকে জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।

জালিয়াতির এ ঘটনা তদন্তে পরদিন (২৯ জুন) তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে কমিটি গঠনের এ তথ্য জানানো হয়।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তরের উপপরিচালক ডা. মো. সাখাওয়াত উল্ল্যাহকে সভাপতি করে গঠিত কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীকে। আর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. সুমন বড়ুয়া কমিটির সদস্য

সচিব। তিন সদস্যের এই কমিটিকে তদন্ত পূর্বক তিন কর্মদবিসের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন জমাদানে নির্ধারিত সময় ছিল গতকাল (সোমবার)। আর গতকালই আরো ৫ কর্মদিবস সময় চেয়ে আবেদন করেছে তদন্ত কমিটি। সময় বৃদ্ধির আবেদন জানানোর তথ্য নিশ্চিত করে তদন্ত কমিটির প্রধান বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তরের উপপরিচালক ডা. মো. সাখাওয়াত উল্ল্যাহ আজাদীকে বলেন, আমরা এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট অনেকের লিখিত ও মৌখিক সাক্ষ্য নিয়েছি। তবে প্রতিবেদন প্রস্তুতের কাজ শেষ হয়নি। যার কারণে আমরা আরো ৫ কর্মদিবস সময় চেয়েছি। একই তথ্য জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির সদস্য চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীও।

এদিকে, ঘটনার পরদিন (২৯ জুন) হিসাবরক্ষক মো. ফোরকানকে সকল ধরণের আর্থিক সংক্রান্ত কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর ৩০ জুন এ ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই চারজন হলেনচট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষক মো. ফোরকান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মুন্সি ফারুক, একই প্রতিষ্ঠানের সাজ্জাদ হোসেন ও মুকিত মন্ডল। বিলের অর্থ ছাড়করণে ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্র তৈরির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে অভিযোগে। উল্লেখ্য, ২০১৩১৪ অর্থ বছরে মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজ কর্তৃক সরবরাহকৃত ৮টি আইসিইউ বেড, ৮টি ভেন্টিলেটর ও ১টি কার্ডিয়াক পেশেন্ট মনিটর কেনাকাটা নিয়ে দুদকে আগে থেকেই মামলা চলমান রয়েছে। মামলা থাকায় এর বিলও আটকে রয়েছে। এরই মাঝে ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরি আদেশ তৈরি করে জালিয়াতির মাধ্যমে গত ২৮ জুন বকেয়া বিলটির অর্থ ছাড়করণের চেষ্টা করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে ছাত্রলীগ নেতা খুনের ঘটনায় আটক ৭
পরবর্তী নিবন্ধআধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে