রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সহ চার সদস্য বিশিষ্ট টিমকে অভিযোগ করে বলেন, আরসা বা আল-ইয়াকিন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাদেরকে ক্যাম্পে কাজ করতে বাধা প্রদান করে। সেই ক্ষেত্রে তারা ক্যাম্পে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পান না।
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে তারা এ অভিযোগ করেন।
আজ শনিবার (৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় পররাষ্ট্র সচিব সহ চার সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম ক্যাম্পে আগমন করেন।
এ টিমের অন্যান্যরা হলেন পশ্চিম ইউরোপ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মহাপরিচালক ফাইয়েজ মোর্শেদ কাজী, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের দপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলীমুজ্জামান, সহকারী সচিব (এম এম এ) মো. সোয়াইবুল ইসলাম তরফদার।
ক্যাম্পে সচিব সহ সফরকারীদের স্বাগত জানান ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) মো. নাইমুল হক ও উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন আহমেদ।
১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক (এসপি) মো. নাইমুল হক জানান, পররাষ্ট্র সচিব এবং তার সফরসঙ্গীরা সকাল সাড়ে ৯টায় ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদরদপ্তর পরিদর্শন করেন এবং এপিবিএন অধিনায়কের সাথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে মতবিনিময় করেন।
তারপর তারা পৌনে ১১টা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত উখিয়া কুতুপালংয়ে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক ক্যাম্প ১ ইস্ট ডি ব্লকের রোহিঙ্গা নেতা প্রয়াত মাস্টার মুহিবুল্লাহর বাসা এবং তার সাংগঠনিক কার্যালয় আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইট্স (এআরএসপিএস) অফিস পরিদর্শন করেন।
এ সময় তিনি তার সাংগঠনিক কার্যালয় এবং কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং কীভাবে, কখন, কেন নিহত হয়েছেন সেই বিষয়ে মুহিবুল্লাহর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি প্রয়াত মাস্টার মুহিবুল্লাহর মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করে শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।
পরে তিনি ক্যাম্প-৪ এ অবস্থিত এনজিও সংস্থা সিএনআরএস-এর কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করেন।
সেখানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের চারজন রোহিঙ্গা প্রতিনিধি-ক্যাম্প ১ ইস্টের ইয়াসমিন আরা, মো. কামাল, মোহাম্মদ জুনায়েদ ও ক্যাম্প ৮ ডব্লিউ-এর সাহিদার সাথে কথা বলেন তারা।
রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা ওমেন ফিলিং স্কুল, ওমেন এমপ্লয়ি ও আরাকান অল্ট্রুইসম সোসাইটি এন্ড এডুকেশন নামের তিনটি সংগঠন পরিচালনা করছেন বলে অবহিত করেন এবং তাদের পক্ষ হতে কিছু প্রস্তাবনা সফরকারীদের কাছে তুলে ধরেন।
তারা বলেন, আরসা বা আল-ইয়াকিন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাদেরকে ক্যাম্পে কাজ করতে বাধা প্রদান করে। সেই ক্ষেত্রে তারা ক্যাম্পে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পান না। ক্যাম্পে মহিলাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা ও বাল্যবিবাহ সম্পর্কে ক্যাম্পে সচেতনতা বৃদ্ধি করাসহ তাদের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কেও কথা বলেন তারা।
বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা তাদেরকে মায়ানমারের রাষ্ট্রদূতের সাথে কথা বলার সুযোগ করে দেওয়ার অনুরোধ করেন।
বৈঠক শেষে দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্প ৫-এর এসএআরআই আইসোলেসন সেন্টার এবং চিকিৎসা কেন্দ্র পরিদর্শন করে রোহিঙ্গাদের কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে সফরকারী টিমের সদস্যরা।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৮-এ অবস্থিত ওয়চ টাওয়ারে উঠেন এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৯/১০ এলাকা পরিদর্শন শেষে বিকেলে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন করেন পররাষ্ট্র সচিব।
উল্লেখ্য, তিনি দু’দিনের সফরে গতকাল শুক্রবার কক্সবাজার আসেন।