আরও ৮০ হাজার রোহিঙ্গা যাবে ভাসানচরে

কার্যক্রমে যুক্ত হল জাতিসংঘ

| বৃহস্পতিবার , ৭ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ

ভাসানচরের কার্যক্রমে জাতিসংঘের যুক্ত হওয়ার সঙ্গে দ্বীপটিতে আরও ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে নেওয়ার পরিকল্পনা জানালেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। দীর্ঘ আলোচনার পর রোহিঙ্গাদের সহায়তার অংশ হিসেবে ভাসানচরের কার্যক্রমে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর যুক্ত হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। এ নিয়ে শনিবার সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন। সমঝোতা স্মারকে ইউএনএইচসিআর-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সই করার কথা রয়েছে। কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে আরও ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে অনেক দিন থেকেই কাজ করছে সরকার। তবে এ দ্বীপে মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে জাতিসংঘ শুরু থেকেই আপত্তি তুলেছিল। খবর বিডিনিউজের।
সরকার ওই সময় থেকেই ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে আসছিল। তাদের বোঝানো ও রাজি করানোর চেষ্টার অংশ হিসেবে বেশ কয়েকবার পরিদর্শনের ব্যবস্থাও করা হয়। দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পর গেল জুনে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সহায়তা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার ইংগিত দেয় জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাটি। সেই ধারাবাহিকতায় সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে। গতকাল বুধবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মোহসীন বলেন, শনিবার ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে সরকারের এ সমঝোতা স্মারক সই হবে। ভাসানচরে ইতোমধ্যে প্রায় ২০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা নেওয়া হয়েছে। আরও ৮০ হাজার নিয়ে যাব। এ ব্যাপারে ইউএনএইচসিআর আমাদের সঙ্গে যেভাবে কক্সবাজারে কাজ করেছে, একইভাবে ভাসানচরেও কাজ করে যাবে- এ নিয়ে সমঝোতা স্মারক হবে। আশা করি, অক্টোবরে শুরু করব। ভাসানচরে এক লাখের একোমোডেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। আপাতত এ ব্যবস্থা। পরে কী করা যায় দেখা যাবে। এপ্রিলের মধ্যে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে এখন সরকার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব বলেন, ভাসানচরে আমরা আগে যে কয়জনকে নিয়ে গিয়েছি, এতদিন পর্যন্ত সেখানে ইউএনএইচসিআর বা ইউনাটেড নেশন্স এর সঙ্গে জড়িত নেই। এ সমঝোতা সইয়ের জন্য গত কয়েক মাস ধরে কাজ করছি। বাংলাদেশে আমার সভাপতিত্বে একটা কমিটি করা হয়েছিল। অপর পক্ষেও বড় টিম কাজ করত। আমরা চূড়ান্ত করেছি, ইনশাহআল্লাহ শনিবার সমঝোতা সই স্বাক্ষরের পর ভাসানচরে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করব। ইতোমধ্যে যারা ভাসানচরে গেছে তাদেরও কক্সবাজারের মতো করেই সহায়তা করবে ইউএনএইচসিআর। ভাসানচরের জন্য (কীভাবে স্থানান্তর করা হবে) অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করতে হবে। আমরা করছি। সমঝোতার স্মারক হওয়ার পরেই শুরু হতে হতে অক্টোবরের শেষ নাগাদ লাগতে পারে। এপ্রিল মাসের মধ্যে ৮০ হাজার রোহিঙ্গা নিয়ে যাব যোগ করেন তিনি।
এর আগে বাংলাদেশ সফরকালে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সহকারী কমিশনার (অপারেশন) রাউফ মাজৌ বলেছিলেন, এখন আলোচনা চলছে, ভাসানচরে বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার লোক আছে, যারা বাংলাদেশে থাকা শরণার্থী। তাদেরকে সহযোগিতা ও সহায়তা দেওয়া দরকার।
এদিকে বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জাতিসংঘের মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরুর বিষয়ে সবকিছু চূড়ান্ত। যেকোনো সময় তারা যাবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অপেক্ষা করুন। আমরা সবসময় আশাবাদী। আফগানিস্তান ইস্যুর কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুটি চাপা পড়ে যাবার বিষয়টিও ঠিক না। এবার জাতিসংঘে যে বড় ইভেন্ট হয়েছে, সেখানে বড় বড় দেশগুলো সবাই এক বাক্যে এর ওপর জোর দিয়েছে। আশা রাখুন, ভালো কিছু হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডব্লিউএইচওর অনুমোদন পেল ম্যালেরিয়ার প্রথম টিকা
পরবর্তী নিবন্ধটাকার লোভে সদ্যজাত নাতিকে বিক্রি