কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজায় যানজট নিরসন এবং যাতায়াত সহজীকরণের লক্ষ্যে ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও দুই লেইন বর্ধিতকরণের কাজ শুরু হচ্ছে। চলতি মাসেই কাজ শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর থেকে। সওজ এই প্রকল্পের অধীনে কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটেক টোল প্লাজা সংলগ্ন মহাসড়কের অ্যাপ্রোচ রোডে নতুন আরসিসি পেভমেন্ট রোড এবং ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট নির্মাণের কাজ শুরু করতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে, বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে সাইটও। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ বড় বাড়ি পুকুর পাড় এলাকার মেসার্স হাসমত এন্ড ব্রাদার্স।
এই ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেহ উদ্দিন আজাদীকে বলেন, কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর টোলপ্লাজা এলাকায় যানজট নিরসনে বিদ্যমান টোলপ্লাজার দুইপাশে আরও দুই লেইন বাড়ানো হচ্ছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয়েছে। সাইটও বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা এই মাস থেকে (চলতি জানুয়ারি থেকে) কাজ শুরু করবেন। আমরা তাদেরকে তাগাদা দিচ্ছি কাজের মান ঠিক রেখে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যেন কাজ শেষ করা হয়।
প্রকৌশলী মো. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, টোলপ্লাজা এলাকায় এখন দুই পাশে ৪টি করে ৮ বুথ (চট্টগ্রাম থেকে কঙবাজারের দিকে যেতে ৪টি বুথ এবং চট্টগ্রাম শহরে আসার দিকে ৪টি বুথ) রয়েছে। এই দুই পাশে আরও ১টি করে করে দুটি লাইন বাড়বে। তখন উভয় পাশে টোল আদায়ের বুথের সংখ্যা ১০টি হবে। এখন মাঝে মধ্যে যে যানজট দেখা যায়–তখন সেটিও আর থাকবে না।
চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪–২০২৫ অর্থবছরে তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর টোল প্লাজা সংলগ্ন অ্যাপ্রোচ রোডে আরসিসি রোড নির্মাণ করা হবে। কাজটি দুটি ধাপে সম্পন্ন হবে বেস টাইপ–১, ডেন্স বিটুমিনাস সার্ফেসিং–বেস কোর্স এবং ডেন্স বিটুমিনাস সার্ফেসিং–ওয়্যারিং কোর্স।
প্রকল্পের মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৯০ লাখ ৫৯ হাজার ২৫৯ টাকা ৫৫৬ পয়সা। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, কাজটি সম্পন্ন করার জন্য ১৮০ দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। নোটিশ জারির তারিখ থেকে সময় কার্যকর হবে এবং ১৫ দিনের মধ্যে প্লেন সিমেন্ট কনক্রিট (পিসিসি) জমা দিতে হবে।
এই ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেহ উদ্দিন আজাদীকে বলেন, বর্তমানে টোল প্লাজা এলাকায় দুই পাশে ৪টি করে মোট ৮টি বুথ (সেতু থেকে নেমে কঙবাজারের দিকে যেতে ৪টি বুথ এবং চট্টগ্রাম শহরে আসার দিকে ৪টি বুথ) রয়েছে। তারপরও প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার যানজট সৃষ্টি হয়। নতুন করে দুই পাশে দুটি লেইন বাড়ানো হলে উভয় পাশে বুথের সংখ্যা দাঁড়াবে ১০টি। এখন মাঝে মধ্যে যে যানজট দেখা যায়– তখন সেটিও আর থাকবে না। ঠিকাদারকে ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয়েছে, সাইটও বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। কাজ শুরু করার জন্য। এই মাসেই কাজ শুরু হবে।
কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজার ইজারাদার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ–ভারত যৌথ কোম্পানি সেল–ভ্যান জেভির প্রকল্প ব্যবস্থাপক সুমন ঘোষ বলেন, বর্তমানে শাহ আমানত সেতু দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৭ হাজারেরও বেশি গাড়ি চলাচল করছে। ৮টি লেন দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে, কিন্তু বিশেষ ছুটির দিনে (বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার) চাপ বেড়ে যায়। তখন যানজটের সৃষ্টি হয়। আমরা বিষয়টি সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বলেছি। তারা দুই পাশে আরও দুটি লেইন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে ঠিকাদার সাইটে এসেছেন নোটিশ লাগিয়েছেন। টোল আদায়ে বুথের সংখ্যা দুইপাশে দুটি বেড়ে ১০টি হলে তখন যানজট তেমন থাকবে না।