আয়ানের মৃত্যুতে স্বাস্থ্যের প্রতিবেদন হাস্যকর : হাইকোর্ট

| মঙ্গলবার , ৩০ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৮:৪৫ পূর্বাহ্ণ

ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনকে ‘লোক দেখানো’ ও ‘হাস্যকর’ বলেছে হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর বেঞ্চে ওই তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর শুনানির সময় জ্যেষ্ঠ বিচারক এ মন্তব্য করেন। আর রিটকারী আইনজীবী ওই প্রতিবেদনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ আখ্যা দিয়ে পুনর্তদন্তের আদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন। খবর বিডিনিউজের।

আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদন এদিন হলফনামা আকারে আদালতে জমা দেয় রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় এবং রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম আদালতে শুনানি করেন। দুই পক্ষের শুনানি শেষে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছে আদালত। রিটকারী আইনজীবীকে ওইদিন তাদের পুনর্তদন্তের আবেদন হলফনামা আকারে জমা দিতে বলা হয়েছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় এদিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করলে শাহজাহান আকন্দ মাসুম কথা বলার অনুমতি চান। জ্যেষ্ঠ বিচারক তাকে পরে সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানান। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিবেদন থেকে পড়ার সময় জ্যেষ্ঠ বিচারক জানতে চান, মৃত্যুর পর সুরতহাল হয়েছে কিনা। তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ‘হয়নি’ বলে জানান। প্রতিবেদনের এক জায়গায় বলা হয়েছে, শিশু আয়ানের ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা ছিল এবং সেজন্য তাকে স্টেরয়েড দেওয়া হয়। তখন জ্যেষ্ঠ বিচারক প্রশ্ন করেন, এ বিষয়টি জানা থাকার পরও তারা কেন অপারেশন করলেন? এক পর্যায়ে আদালত প্রতিবেদন জমাদানকারী কর্মকর্তাকে ডেকে কিছু বিষয় জানতে চায়। আয়ানের ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা জানার পরও তাকে অপারেশন করা ‘উচিত হয়নি’ বলে মন্তব্য করেন জ্যেষ্ঠ বিচারক। তিনি বলেন, কী এমন তাড়া ছিল যে ওইদিনই তার অপারেশন করতে হবে? দুচারদিন পর হলে এমন কী ক্ষতি হত?

এরপর রিটকারী আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুমকে ডাকে আদালত। অ্যাডভোকেট মাসুম ওই প্রতিবেদন ‘সম্পূর্ণ পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে অভিযোগ করেন। প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট কোনো দিক নির্দেশনা নেই বলেও মন্তব্য করেন। প্রতিবেদনে চারটি সুপারিশ করা হলেও সেগুলো ‘অস্পষ্ট’ বলে মন্তব্য করে তিনি আদালতের কাছে পুনর্তদন্তের আদেশ চান। তখন জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, আপনি অ্যাফিডেভিট করে আনেন, অর্ডার দেব। এটা আইওয়াশ, হাস্যকর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে প্রতিবেদন দিয়েছে, সেখানে আয়ানের মৃত্যুর নির্দিষ্ট কারণ চিহ্নিত না করে কয়েকটি সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। শিশুটির এমন মৃত্যুর জন্য সরাসরি কাউকে দায়ী না করে ভবিষ্যতে এ ধরনের মৃত্যু এড়াতে চার দফা সুপারিশ তুলে ধরেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইলন মাস্ককে হটিয়ে শীর্ষ ধনী বার্নার্ড আর্নল্ট
পরবর্তী নিবন্ধআবু সুফিয়ানসহ বিএনপির ৫১ নেতাকর্মীর আগাম জামিন