এক যুগের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে বড় বিপর্যয় দেখল যুক্তরাষ্ট্র; মূলধন সংকটের কারণে বন্ধ করা হল সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিবি)। ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক এই ব্যাংকটি যুক্তরাষ্ট্রের ষোড়শ বৃহত্তম ব্যাংক। সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি খাতের বড় কোম্পানি ও উদ্যোক্তাদের ঋণ আসত এই ব্যাংক থেকে।
সিএনএন জানিয়েছে, গত শুক্রবার ব্যাংকটির কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর এর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইউএস ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন (এফডিআইসি)। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকে জমা করা অর্থের কী হবে, তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন অনেক কোম্পানি ও আমানতকারী। এফডিআইসি বলছে, ব্যাংকের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারী বা পাওনাদারদের অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা করবে। খবর বিডিনিউজের।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল প্রটেকশন অ্যান্ড ইনোভেশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এসভিবির বীমাকৃত আমানত রক্ষা করবে ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স ন্যাশনাল ব্যাংক অব সান্তা ক্লারা। সিলিকন ভ্যালির সম্পদ বিক্রির সম্ভাব্য লভ্যাংশ থেকে তাদের অর্থ পরিশোধ করা হবে। গত ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত এসভিবির সম্পদ ছিল প্রায় ২০৯ বিলিয়ন ডলারের এবং আমানত ছিল ১৭৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।
৪৮ ঘণ্টার নাটকীয় ঘটনাপ্রবাহের পর ব্যাংকটি দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়েছে। ব্যাংকের শেয়ারের দাম দ্রুত নেমে গিয়েছিল। মুদ্রাস্ফীতির হার কমাতে ফেডারেল রিজার্ভ গত বছর সুদের হার বাড়াতে শুরু করে, যার ফলে বন্ডের দর কমে যায়। স্টার্টআপগুলোও করোনা অতিমারির পর থেকে ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ে। ব্যাংক থেকে গ্রাহকেরা সঞ্চিত অর্থ তুলে নেন। গ্রাহকদের টাকার জোগান দিতে কর্তৃপক্ষকে নিজেদের শেয়ার বিক্রি করতে হয়। ফলে অচিরেই ব্যাংকের ভাঁড়ারে টান পড়ে।
বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার মধ্যে ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন মিউচুয়াল ব্যাংকের কার্যক্রম স্থগিত করেছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা, যার সম্পদমূল্য ছিল ৩০৭ বিলিয়ন ডলার। এর ১৫ বছর পর এসভিবি যখন বন্ধ হল, তখন ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতি টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। এসভিবির কার্যক্রম বন্ধ শুধু আমানতে নয়, ঋণ কার্যক্রম ও অন্যান্য অর্থায়নেও প্রভাব ফেলবে। এফডিআইসি বলছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটির ঋণগ্রহীতাদের আগের মতোই স্বাভাবিকভাবে অর্থ পরিশোধ করে যাওয়া উচিৎ।