আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, আমি কোন্‌ ব্যাচের?

নারায়ণ কৃষ্ণ গুপ্ত | বুধবার , ১১ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৪:৩৫ পূর্বাহ্ণ

আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র (১৯৭১১৯৭২ সেশন)। আমি কোন ব্যাচের? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আবার প্রশ্ন ১) ভর্তির সেশন হিসাবে, নাকি ২) পাশের সন হিসাবে ব্যাচ নির্ধারণ করা হবে?

যদি সেশন হিসাবে বিবেচনা করা হয় তাহলে আবারও প্রশ্ন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশন শুরু হলো কবে? এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস জানতে হবে। সাধারণভাবে তা সহজে জানার উপায় গুগল। গুগল সার্চ করে দেখা গেল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম এমএ প্রিলিমিনারী ক্লাশ শুরু করা হলো ১৯৬৬ সনের ২৮ নভেম্বর কলা অনুষদের অধীন বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস ও অর্থনীতি বিভাগে ২০০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম ভর্তির সেশন ১৯৬৬৬৭। সে হিসাবে স্বাধীনতা অর্জন পরবর্তী ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির সেশন হবে ১৯৭১৭২ এবং সেশন ক্রমিক হবে ৫ম।

কিন্তু ঊচঝঅ ( ঊী. চযুংরপং ঝঃঁফবহঃং অংংড়পরধঃরড়হ ) (সংগঠনের বয়স প্রায় ২০ বৎসর ) তাদের ৯ম সম্মেলনের প্রাক্কালে ১৯৭১৭২ সনের ছাত্রছাত্রীদের সেশন ক্রমিক নির্ধারণ করল ৭ম এবং এভাবেই পরবর্তীদের সেশন নির্ধারণ করছে। কেন? এ প্রশ্নের উত্তরে জানা গেল বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কেন্দ্রীয় এলামনাই তার যে তালিকা তাতে ১ম সেশনকে ৩য় সেশন হিসাবে দেখানো হয়েছে। সে হিসাবে সকল বিভাগের এলামনাই বা প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের সংগঠন তাদের ব্যাচ নির্ধারণ করছে। আবারো প্রশ্ন, কেন ১ম সেশনকে ৩য় দেখানো হলো? যে জন্য ৫ম ৭ম হয়ে গেল। আর এভাবেই সকলের নীরবে পথ চলা।

এবার ‘পাশের সন’ বিবেচনার বিষয়টি পর্যালোচনা করা যাক। ১৯৬৬ ৬৭ এর প্রিলিমিনারী ব্যাচ মাস্টার্স দিল ১৯৬৮ সালে। প্রথম পাশের সন ১৯৬৮। তারাই ১ম ব্যাচ। ১৯৭১১৯৭২ ভর্তির সেশনের ছাত্রছাত্রীদের মাস্টার্স পাশের সন ১৯৭৫ ( যদিও স্বাধীনতা যুদ্ধের কারণে পরবর্তীতে পাশ করেছে )। সে হিসাবে তাদের ব্যাচ হয় ৮ম। গণ্ডগোল এখানেই। সেশন হিসাবে ১৯৭১৭২ ৫ম। মতান্তরে ৭ম। পাশের সন বিবেচনায় ১৯৭১৭২ ৮ম। হ্যাঁ একটা বিষয় এখানে উল্লেখযোগ্য। ১ম কয়েকটি ব্যাচ ছিল প্রিলিমিনারী। ১৯৬৯ সালে অনার্স চালু হওয়ায় মাস্টার্স পাশে সময় বেশি লেগেছে। এভাবেই কিন্তু চবির কিছু সংগঠন আছে। এবার আবারো প্রশ্ন। মাস্টার্স পাশ করলেই কি তবে ‘ব্যাচ’ নির্ধরিত হবে? অনার্স পাশের পর পরবর্তী বা উচ্চতর ডিগ্রির জন্য দেশের বা বিদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোনো ছাত্র বা ছাত্রী যেতে পারে। সেক্ষেত্রে তার ব্যাচ কী হবে? অনুরূপভাবে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী অনার্স পাশ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স পড়লে তার ‘ব্যাচ’ কী হবে? আবার ভর্তি হয়ে কোনো কারণে (ড্রপ দেওয়া, অসুস্থ হওয়া, সাময়িক সাসপেন্ড হওয়া, ইত্যাদি ) সেশন গ্যাপ হলে অর্থাৎ অনার্স বা মাস্টার্স পরীক্ষা দিতে দেরি হলে তার ব্যাচ ক্রমিক কী হবে? অথবা অনার্স নিয়মিত হিসাবে পাশ করে মাস্টার্সে গ্যাপ হলো। তখন তার ব্যাচ ক্রমিক কী হবে?

উত্তর কে দেবে? চবির ছাত্রছাত্রীরা নাকি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন?

পূর্ববর্তী নিবন্ধআত্মমর্যাদা সম্পন্ন হতে হলে আত্মবিশ্বাসী হওয়া জরুরি
পরবর্তী নিবন্ধদূরের টানে বাহির পানে